লন্ডন সফরে মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে লন্ডনে গিয়েছেন তিনি। সঙ্গে একগুচ্ছ কর্মসূচি। ফিরবেন আট দিন পর।প্রথম দিন থেকেই তাঁকে দেখা গেল প্রাণবন্ত মেজাজে। কখনও হাওয়াই চপ্পল পরে হাঁটলেন, কখনও করলেন 'ওয়ার্ম আপ', কখনও আবার লন্ডনের হাইড পার্কের সঙ্গে তুলনা টানলেন কলকাতার ইকো পার্কের। সেখানে সকাল সকাল সারলেন অ্যারোবিক্স। তারপর প্রায় ৫ কিলোমিটার হাঁটেন। পরনে ছিল তাঁর সিগনেচার স্টাইলের সাদা শাড়ি, পায়ে হাওয়াই চপ্পল, শীত আটকাতে একটা জ্যাকেট।
সোমবার ভারতীয় হাই কমিশনের অনুষ্ঠানে আতিথ্য গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে লন্ডন সফরে গিয়েছেন বাংলার বিশিষ্ট শিল্পপতিরা। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন লন্ডনে গিয়ে ভারতের হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁর আয়োজনেই লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডনের শিল্পপতিদের কাছে বাংলায় বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। ইন্ডিয়া হাউসে চায়ের নিমন্ত্রণে কথা হয় অনেক কিছু নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভারতীয় হাই কমিশনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সে-দেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও সামাজিক ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। কথা হয়, বাংলার সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক মজবুদ করার বিষয়ে। উভয় জায়গার শিল্পপতিরা যাতে পারস্পরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ' বাংলা দেওয়াল নয়, সেতু নির্মাণে বিশ্বাস করে।' তিনি বলেন, স্বাধীনতার আগে এক সময় কলকাতাই ছিল ভারতের রাজধানী। তখন থেকেই লন্ডনের সঙ্গে কলকাতার গভীর সংযোগ। এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বহু প্রশিক্ষিত, দক্ষ শ্রমিক রয়েছে । তাই আগামীতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা বাংলাতে উজ্জ্বল। বাংলা শ্রম নিবিড় শিল্পে আরও লগ্নি টানতে আগ্রহী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় আগামী দিনে কর্মসংস্থানের সেরা ডেস্টিনেশন হয়ে উঠতে চলেছে কলকাতা। সেই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, নারীর ক্ষমতায়ন থেকে খেলাধুলো , সবেতেই এগিয়ে বাংলা।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বারবার বাংলার বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের আদর্শকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি জানান, তিনি ব্রিটেনের সঙ্গে বাংলার সম্পর্ক আরও গভীর করার চেষ্টা করবেন। লন্ডন ও কলকাতার স্থায়ী সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন তিনি। তিনি বলেন, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই বাংলার শিকড়। ভারতে অনেক রাজ্য রয়েছে। কোনও রাজ্য় ধনী, কোনও রাজ্য গরিব, কোনওটা বড়, কোনওটা ছোট। কিন্তু ভারতের আদর্শের ভিত্তি বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই।
লন্ডন সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছে কুণাল ঘোষও। তিনি বিভিন্ন সময় মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি পোস্ট করছেন। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় হাইকমিশনারকে উপহার দিয়েছেন নিজের আঁকা ছবি, কবিতাবিতান ও Mamata: Frames of change বইটি। হাইকমিশনারও মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দিয়েছেন ।