কলকাতা : বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ রাজ্যের। ৬১ লক্ষ ৫৫ হাজার কৃষককে ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিমা সংস্থাগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কৃষি ও পঞ্চায়েত দফতরের সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ডিভিসর জল ছাড়ার সময় দু'বার বন্যা হয়েছে। আবার, দানার পর যে ব্যাপক বৃষ্টি হল তারজন্য যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতির ক্ষেত্রে ...যে বিমা সংস্থা দায়িত্ব পেয়েছে..তাঁর কাছে রিপোর্ট যেটা.... মুখ্যমন্ত্রীর কাছে....পর্যাপ্ত লোক কাজ করছেন না। কোনো কৃষক যাতে বঞ্চিত না হন, সেটাই আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে, আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের মতো কোনো স্কিম করি না। আমাদের স্কিমের অভিমুখ মানবিক। সেখানে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা বিচার করে নিয়ে মানুষ যাতে পায় সেটা দেখে নিতে হবে। "
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি !
সম্প্রতি ঝড়ের তাণ্ডব থেকে রেহাই পেলেও, ভারী বৃষ্টিতে ভাসতে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলাকে। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুরের বিঘার পর বিঘা চাষের জমি জলের তলায় চলে যায়। জমা জলে পড়ে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়ে কৃষকদের।
বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর। জলে ডুবে যায় ধান গাছ। সবজির জমিতেও জল থৈ থৈ করে। আর ক'দিন পরেই ধান কাটার সময়। তার আগে মাথায় হাত কৃষকদের। ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টি হয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায়।
বাঁকুড়ার কোতুলপুরে কংসাবতী সেচ ক্যানাল ভেঙে হরিহট্টপুর মৌজা সংলগ্ন এলাকায় প্লাবিত হয় বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। রাইপুর, সারেঙ্গাতেও টানা বৃষ্টির জেরে জল জমে যায় বেশিরভাগ চাষের জমিতে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, দাঁতনের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। টানা বৃষ্টির জেরে বেশিরভাগ ফসলই নষ্ট হয়ে যায়।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বৃন্দাবনপুর, পঞ্চমদূর্গা, নস্করদিঘি, গোঁসাইবেড়, মাইসোরা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েন।
গত মাসেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল এই জেলায়। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের যন্ত্রণা বাড়ল কৃষকদের।
ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, লালগড়, বেলপাহাড়ি এলাকায় শীতের সবজি চাষ শুরু হয়ে গেছে। টানা বৃষ্টির জেরে জলের তলায় সবজির চারা। মাঠের ফসল না থাকলে পেটের ভাত কীভাবে জোগাড় করবেন, তাই ভেবে চিন্তায় কৃষকরা।