কলকাতা: পূর্বসূরির সঙ্গে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। কিন্তু নবনিযুক্ত রাজ্য়পালকে নিয়ে সমস্য়া হবে না বলেই আশাবাদী তিনি। বৃহস্পতিবার রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নয়া রাজ্যপাল অত্যন্ত ভদ্র মানুষ বলে রাজভবন থেকে বেরিয়ে জানান তিনি। নানা বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁদের মধ্য়ে। 


বৃহস্পতিবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর সেখান থেকে বেরোন। সেই সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "রাজ্যপাল অত্যন্ত ভদ্র মানুষ। আশাকরি আর কোনও সমস্যা থাকবে না।" রাজ্যপালের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে বলেও এ দিন সাক্ষাতের পর জানান মমতা। 


রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, "রাজ্যপালকে বড়দিন এবং নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। এটাই আমাদের প্রথা। বরা বর করে থাকি। রাজ্যপাল খুব ভাল মানুশ। নিপাট ভদ্রলোক। রাজ্য সরকারের সঙ্গে ওঁর সম্পর্ক এতই ভাল যে, আমার মনে হয় আর কোনও সমস্যা হবে না এবং আমাদের যেটা সমস্যা, তা খোলাখুলি আলোচনা করতে পারি আমরা। সেখানে আলোচনা করে সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলা যাবে বলে আশাবাদী আমরা। উনি সর্বতো ভাবে রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। তার জন্য আমরা খুব কৃতজ্ঞ।"


প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপোড়েনের অধ্যায়  এখনও টাটকা। প্রকাশ্য বয়ানে পরস্পরকে আক্রমণের নজিরও রয়েছে। একসময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, সাংবিধানিক পদে থেকে ধনকড় প্রশাসনিক কাজে নাক বলাচ্ছেন বলেও অভিযোগ তেলে তৃণমূল। রাজ্যপালকে 'পদ্মপাল', 'বিজেপি-র এজেন্ট' বলেও কটাক্ষ করেন দলের নেতানেত্রীরা।


কিন্তু বিজেপি-র তরফে ধনকড়কে উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত করা হলে, তৃণমূলই তাঁর সমর্থনে ভোট দেয়। তা নিয়ে কম কটাক্ষ শুনতে হয়নি জোড়াফুল শিবিরকে। কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীরা তৃণমূল-বিজেপি সেটিং তত্ত্ব তুলে ধরে। যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলা থেকে ধনকড়কে সরাতেই কেন্দ্রে তাঁকে সমর্থনের কৌশল নেয় তৃণমূল। 


ধনকড়ের পর বাংলার অন্তর্বর্তীকালীন রাজ্যপাল হন লা গণেশন। তার পর স্থায়ী ভাবে নিযুক্ত হন আনন্দ। কলকাতার সঙ্গে নিবিড় যোগ তাঁর। নিয়োগের পর প্রথম সাক্ষাৎকারে রবীন্দ্রনাথের কবিতাও মুখস্থ শোনান। এখনও পর্যন্ত তৃণমূল সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক মসৃণ ভাবেই এগোচ্ছে।