সন্দীপ সরকার ও শিবাশিস মৌলিক, দার্জিলিং ও কলকাতা : বিপদে সিকিমকে (Sikkim Flash Flood) সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। অথচ সিকিমের বিপর্যয়ে উত্তরবঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই নরেন্দ্র মোদি সরকারের ! কেন্দ্রীয় সাহায্য এবং ত্রাণ নিয়ে, মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যের এমনই অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। 


সিকিমে 'দরাজ', বাংলায় 'কৃপণ' কেন্দ্র ? বিপর্যয়ে মৃত্যুমিছিলের মধ্যেই এবার নতুন বিতর্ক। আবাস যোজনা ও একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ ঘিরে এমনিতেই তেতে রয়েছে বঙ্গ রাজনীতি। তার মধ্য়েই মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন বঞ্চনা-বিতর্ক। নর্থ সিকিম বিপর্যয়কাণ্ডেও মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বাংলার প্রতি বৈষম্যের  অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


এক্স হ্যান্ডলে সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৪ অক্টোবর মেঘভাঙা বৃষ্টিতে লোনক হ্রদ ফেটে, সিকিমে যে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছে, তাতে তছনছ হয়ে গেছে দেশের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্যের উত্তর অংশ। সিকিমের পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড বা SDRF-এর কেন্দ্রীয় শেয়ার থেকে প্রাথমিকভাবে ৪৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন অমিত শাহ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আঁচ করতে মন্ত্রীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় দল গড়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।


আর্থিক সহযোগিতা থেকে ত্রাণ বরাদ্দ, লজিস্টিক পৌঁছে দেওয়া, সবক্ষেত্রেই যে কেন্দ্রের মোদি সরকার শুরু থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, শনিবারও সেকথা জানিয়েছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র-প্রশস্তির দিনই সোশাল মিডিয়ায় তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ উত্তরবঙ্গের দুর্গত মানুষের প্রতি কেন্দ্রের বৈষ্যম্যমূলক আচরণ দেখে আমি বিস্মিত। উত্তরবঙ্গেও বিপর্যয়ের অভিঘাত গুরুতর। সেখানেও একাধিক মৃত্য়ুর ঘটনা ঘটেছে। আমরা ভিখিরি নই। আমরাও সিকিমের পাশে। কিন্তু বিপর্যয়ে কেন্দ্রীয় সাহায্য এবং ত্রাণ ম্যানেজমেন্টের মতো বিষয়ে আমরাও সাম্য ও পক্ষপাতহীনতা চাই।


তিস্তার ভয়াল স্রোতে সিকিম থেকে একের পর এক মৃতদেহ এসে ভিড়ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। নর্থ সিকিমের ফ্ল্যাশ ফ্লাডে কালিম্পঙে তিস্তা পারের বিভিন্ন জনবসতি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বহু জায়গায় ধস নেমে বিচ্ছিন্ন জাতীয় সড়ক। চিন সীমান্ত লাগোয়া সিকিম যাওয়ার পথ গেছে এই উত্তরবঙ্গের ওপর দিয়ে। স্পর্শকাতর 'চিকেন নেক' এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে, মুখ্যমন্ত্রী সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, কীভাবে তাঁর সরকার একার চেষ্টায় পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে।