অনির্বাণ বিশ্বাস, অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও সনৎ ঝা, কলকাতা ও শিলিগুড়ি: পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই দিকে দিকে বিক্ষোভের ঝড়। কোথাও রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, কোথাও পথ অবরোধ, কোথাও আবার বিধায়কের বাড়ির সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিক্ষুব্ধরা, কেউ আবার টিকিট না পেয়ে ভেঙে পড়েন কান্নায়। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্র একই ছবি।
তৃণমূলের পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে নজিরবিহীন বিভ্রান্তি তৈরি হয়। শুক্রবার তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে পুরসভার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। এরপর তৃণমূলের ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া গ্রুপে একটি প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়। তারপর থেকেই জেলায় জেলায় শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। তার সঙ্গে যুক্ত হয় টিকিট না পাওয়াদের ক্ষোভ। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ জারি রইল বাণীবন্দনার দিনেও। শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যখন বাগ্দেবীর আরাধনা, তখন জেলায় জেলায় তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ, অবরোধ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বর্ধমানে নামানো হয় র্যাফ।
দিকে দিকে প্রার্থী তালিকা নিয়ে এই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের শাসক দলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘তৃণমূলের মধ্যে যে মারামারি শুরু হয়েছে। কেউ কাউকে মানছে না। কোনও ডিসিপ্লিন নেই। সর্বোচ্চ স্তরের নেতাদের মধ্যে পা টানাটানি। নিতে তো হবেই। জোড়া ফুলের সঙ্গে জোড়া পাতা। তৃণমূলের মুষল পর্ব শুরু হয়েছে। পার্টির নেতা কে? দিদি না ভাইপো, তা নিয়ে মারামারি চলছে।’
পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিক্ষোভ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘সবারই প্রত্যাশা থাকে। যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের প্রত্যাশিত দল। মানুষ তৃণমূলকে সমর্থন করে। তাই টিকিটের চাহিদা বেশি। পার্থদা-বক্সিদা সবার সঙ্গে কথা বলে লিস্ট করেছেন। আমার মনে হয়, এটা মেনে নেওয়া উচিত। না পাওয়ার যন্ত্রণা থাকে, আমারও ছিল। কিন্তু, দলটা থাকলে সুযোগ সবার জীবনে আসবে। দল থেকে বেরিয়ে গেলে, বিদ্রোহ করলে কোনও ফল হয় না।’
সবমিলিয়ে পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিক্ষোভের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক তরজা।