রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: বাংলার উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে গিয়েছে আদানি গোষ্ঠী (Adani Group)। ঝাড়খণ্ড থেকে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ফরাক্কা হয়ে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুতের তার গিয়েছে বাংলাদেশে (Bangladesh)। আম বাগান, লিচু বাগান, বাড়িঘরের উপর দিয়ে যাচ্ছে হাইটেনশন লাইন। যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ক্ষতিপূরণ নিয়েই অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। 


হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর থেকে আদানি ইস্যুতে উত্তাল গোটা দেশ। আদানির বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারদরে পতন দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে এখন উত্তাপ রয়েছে দেশের অর্থনীতিতে। যার প্রভাব পড়েছে রাজনীতিতেও। আদানি-কাণ্ডে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করছে বিরোধীরা। এই আবহেই আদানি-সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে ক্ষোভের ছবি এই রাজ্যে। যদিও তার সঙ্গে শেয়ারের যোগ নেই, যোগ রয়েছে বিদুতের তারের। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফারাক্কার দাদনতোলা এবং বেনিয়াগ্রামের কৃষকদের একাংশ। একদিকে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি, অন্যদিকে রাস্তায় আন্দোলনের ছক। 


কোন ঘটনায় আপত্তি:
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ (Electricity) সরবরাহের বরাত হয়েছে আদানি গোষ্ঠীর। ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) গোড্ডা জেলায় আদানি গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে বিদ্যুৎ যাবে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং বগুড়ায়। তার জন্য় প্রয়োজন দীর্ঘ বিদ্যুতের লাইনের। সেই কারণেই ফারাক্কায় ৬টি মৌজার ১৩টি গ্রামের উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাইটেনশন লাইন যাচ্ছে আম, লিচুর বাগান, বসত ভিটের উপর দিয়ে। এই কাজেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন কৃষকরা। গাছ কেটে ফেলায় যেমন তাঁদের ক্ষতি হয়েছে, তার সঙ্গে ফলন নিয়েও আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা।


কৃষকদের অভিযোগ: 
আন্দোলনকারী কৃষক মোক্তার শেখ জানাচ্ছেন, 'বাড়ি ছাড়া করে, তিন রাত ধরে কাজ করে চলে গেল, আমারা শুধু বললাম ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। কোনও কথা শোনা হল না।' গত বছরের ২ জুলাই এনিয়ে ধুন্ধুমার হয়েছিল। হাইটেনশন লাইন নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে, বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তখন, পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ এবং মারধরের অভিযোগ ওঠে। এরপরই, আইনি লড়াই শুরু করেছেন কৃষকরা। এবার, ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। আরও এক আন্দোলনকারী কৃষক হাজিকুল আলম বলেন, 'বাবা বয়স্ক, তাঁকে চাপ দিয়ে করেছে। আন্দোলনে নামছি, কেস করা হয়েছে, আরেকটা কেস যাবে হাইকোর্টে।'


রাজনৈতিক তরজা:
আদানির প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। ফরাক্কার ব্লক তৃণমূল সভাপতি অরুন্ময় দাস বলেন, 'আমরা তো অনেক চাষিকে বেশি টাকা পাইয়ে দিয়েছে, আর যারা করছে তাঁরা রাজনৈতিক স্বার্থে আন্দোলন করছে।' গোটা ঘটনায় কেন্দ্র ও রাজ্য- দুই জায়গার শাসক দলকেই নিশানা করেছে সিপিএম। আগামী মাসেই, ঝাড়খণ্ড থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।


আরও পড়ুন: ‘ম্যাডাম আমাকে না ডেকে নিজেই’...নেতা থেকে অভিনেতা হয়ে মমতার কাছে আক্ষেপ শান্তনুর!