বেলডাঙা : বেলডাঙায় (Beldanga) বিস্ফোরণের ঘটনায় ইউএপিএ (UAPA) ধারা যুক্ত করল এনআইএ (NIA)। সেনা গ্রেনেড জাতীয় সামগ্রী তৈরি হচ্ছিল বেলডাঙায়। সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির রিপোর্টে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে বলে দাবি এনআইএ-র। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৭৪টি গ্রেনেড উদ্ধার করেছিল। এই ঘটনায় ধৃতরা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। বিশেষ আদালতে তাঁদের জামিন খারিজের আবেদন জানাচ্ছে এনআইএ।
ঘটনায় NIA তদন্তভার নেওয়ার পর বোমাগুলি পরীক্ষা করে দেখা হয়। সিএফএসএলের রিপোর্ট অনুযায়ী, বোমাগুলি সকেট পাইপ বোমার মতো। অর্থাৎ, এখানে লোহার টুকরো ব্যবহার করা হয়েছে এবং বোমাগুলির যে বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় তাতে চমকে উঠছেন তদন্তকারীরা। কারণ, এই ধরনের বোমা ডিফেন্সের তরফে যে গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়, তার সমতুল্য। ঘরে বসে এই ধরনের বোমা তৈরির সময় তা ফেটে গেলে অনেক মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে NIA-র তরফে। তা আদালতে জানানোও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে UAPA ধারা যুক্ত করার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেই কারণে বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় যে ১৪ জন জামিনে রয়েছেন তাঁদের জামিন খারিজ করার আবেদন জানানো হয়েছে NIA-র তরফে। তদন্তে নেমে NIA এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। যে ইতিমধ্যে জেল হেফাজতে রয়েছে।
গত বছর ১৭ জানুয়ারি বেলডাঙা থানার রামেশ্বরপুর এলাকায় বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় এক জনের। বিস্ফোরণের জেরে একটি ঘরের ছাদ উড়ে যায়। ঘটনার আট মাস পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA। এরপর ঘটনাস্থলে যায় এনআইএ-র প্রতিনিধি দল। প্রথমে বিস্ফোরণ স্থলে গিয়ে খতিয়ে দেখার পর নিহতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন এনআইএ অফিসাররা। নিহতের স্ত্রী জানান কী ভাবে স্বামীর মৃত্যু হল। সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি কী কাজ করতেন এই নিয়েও বিশদ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় স্ত্রীকে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পরিদর্শনের পর নিহতের আত্মীয়রা আশাপ্রকাশ করেন। সঠিক তদন্ত হবে বলে আশা করেন সকলে।
বেলডাঙার ওই বিস্ফোরণ হইচই ফেলে দিয়েছিল নানা দিকে। ঘটনার পর পরই তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ভাঙা ঘর থেকে ৭৪টি সকেট বোমা এবং বোমা তৈরির প্রচুর সরঞ্জাম উদ্ধার করে। তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিশ। এর পর তিন মাসের মধ্যে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়।