রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ : মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সামশেরগঞ্জে অব্যাহত রয়েছে গঙ্গায় ভাঙন (Ganga Erosion)। নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে তিন তিনটি বাড়ি। শেষ সম্বল বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা দুর্গতদের। 


অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই


মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন। চোখের সামনে গঙ্গা গিলে খাচ্ছে সেই বসতবাড়ি। গঙ্গার ভাঙনে চোখে মুখে একরাশ আতঙ্ক নিয়ে অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সামশেরগঞ্জের মহেশটোলার বাসিন্দারা। কয়েকদিনের ভাঙনে গঙ্গায় তলিয়ে গেছে তিন তিনটি বাড়ি। সময়ের যত গড়াচ্ছে আরও ভাঙছে পাড়। এভাবেই আস্ত একটা গ্রাম যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। সামশেরগঞ্জের এক বাসিন্দা বলেছেন, 'এক কথায় ভাঙন খুব মর্মান্তিক ও দুঃখজনক।  কথা ভেবে বুক কেঁপে উঠছে।মাঝখানে একটু ভাঙন থেকে ছিল আবার ৬-৭ দিন শুরু হয়েছে, গত তিনদিন ধরে ভাঙন অব্যাহত।'


বিডিও অফিসে ডেপুটেশন


পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে কোথায় যাবেন কী করবেন? কুল কিনারা না পেয়ে গ্রাম ছাড়ছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে সামসেরগঞ্জে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবিতে বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দিয়েছে কংগ্রেস। একই দাবিতে জঙ্গিপুরের সেচ দফতরের অফিসের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। ফারাক্কা ব্যারাজের জিএমের অফিসের সামনে অবস্থানে বসে তৃণমূলও। জিএমকে লিখিতভাবে দেওয়া হয় ডেপুটেশন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে CISF-এর জওয়ানরা। সামসেরগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেছেন, 'ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে অনিয়ন্ত্রিত জল ছাড়ার জন্য এই পরিস্থিতি। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ফারাক্কা ব্যারেজের অব্যবহৃত জমি ব্যবহার করতে দিতে হবে।' প্রতিবছর গঙ্গা ভাঙন সামশেরগঞ্জের বাসিন্দাদের জীবনে নিয়ে আসে দুর্দশা। আদৌ কি কোনওদিন স্থায়ী প্রতিকার হবে ?


নদীগর্ভে কালী মন্দির


স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকে গঙ্গা তীরবর্তী এই এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। তলিয়ে গেছে আস্ত দোতলা বাড়ি, বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি। রবিবার গঙ্গাগর্ভে চলে যায় গ্রামের শ্মশান কালীর মন্দির। তারপর থেকেই আশ্রয়হীন হওয়ার আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। ভাঙনের কবলে গোপালপুর-বালুটোলা গ্রামের প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা। ভিটেছাড়া হওয়ার চিন্তায় ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপাত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলেও প্রকৃতির এই ভয়াল রূপ থেকে রক্ষার স্থায়ী রাস্তা কবে মিলবে, সে উত্তরের কোনও সন্ধান নেই।


আরও পড়ুন- সিভিকে 'না', মুখ্যমন্ত্রীকে স্থায়ী চাকরির আবেদন মালবাজারের মসিহা মহম্মদ মানিকের