প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: ই-নাগেটস মোবাইল গেমিং অ্যাপ (mobile gaming app) বন্ধ করে দেওয়ার পর নতুন অ্যাপ লঞ্চ করে চলছিল প্রতারণা (fraud)। চাঞ্চল্যকর দাবি ইডি-র (ED)। কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে দাবি, পরিচয় লুকোতে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (bank account) ভাড়া করত প্রতারকরা। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে একাধিক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে বলেও ইডি সূত্রে দাবি। 


কী হয়েছে? 
মোবাইল গেমিং অ্যাপ প্রতারণা চক্রে নতুন চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির। অভিযোগ, লকডাউনের সময় ওই অ্যাপ খুলে বাজার থেকে প্রচুর টাকা তুলে নেওয়ার পর একবছরের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয় ই-নাগেটস। এর ছমাস পরই তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, এরপর নতুন অ্যাপ লঞ্চ করে প্রতারণা চলছিল। সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে অফিস ভাড়া করা হয়। কিন্তু ইডি সূত্রে খবর, ঠিকানা ধরে সেখানে গিয়ে আধিকারিকরা দেখেন সেখানে কোনও অফিস নেই। ভুয়ো ঠিকানা দিয়ে অফিস করা হয়েছে। তবে সম্ভবত সেখানে স্বয়ংক্রিয় সার্ভার ও কম্পিউটারের মাধ্যমে কারবার নিয়ন্ত্রণ করত বিদেশে থাকা প্রতারকরা। পাশাপাশি আরও একটি বিষয় জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সম্ভবত নিজের কর্মচারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা পাচার করত অভিযুক্ত ও ধৃত ব্যবসায়ী আমির খান। এবং প্রতি মাসে ভাড়া হিসেবে তাঁদের টাকা দেওয়া হত, এমনও জানা যাচ্ছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া করেই গোটা প্রতারণা চক্র চলত, দাবি ইডি-র। কিন্তু কী ভাবে? কী ভাবেই বা কাজে লাগত নতুন অ্যাপ? জানতে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। পাশাপাশি গাজিয়াবাদের যে বাড়ি থেকে অভিযুক্ত আমির খান গ্রেফতার হন, সেই বাড়ির মালকিনকে পরপর দু’ দিন ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর ভূমিকাও। 


প্রেক্ষাপট...


 ১০ সেপ্টেম্বর ইডির অভিযানে আমিরের বাড়ির খাটের নীচ ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ED! এরপর আমির ধরা পড়ার পর আরও ১৪ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সির হদিশ পায় কলকাতা পুলিশ! আর বুধবার ১২ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সির খোঁজ পান তদন্তকারীরা। আমিরের আমিরির আরও কত নমুনা আছে? তারই খোঁজে বুধবার আরও ৫টি জায়গায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ। তার মধ্যে ই-নাগেটস্-অ্যাপের যোগসূত্রে, এদিন বিকেলে সেক্টর ফাইভে, ক্যুইক ব্লক-ই-কমার্স নামে এক সংস্থার অফিসে হানা দেয় পুলিশ। সেখানে ঢুকেই চোখ কপালে ওঠে অফিসারদের। দেখা যাচ্ছে, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সেগুলির সার্ভার - সব চলছে! অথচ একটিও লোক নেই! অফিসে তল্লাশি চালিয়ে ৩ হাজারের বেশি ডেবিট কার্ড ৪৮৩টি ব্যাঙ্ক কিট উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়াও ১৯৫২টি সিম কার্ড উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, এই অফিসে কাউকে না পাওয়া গেলেও, প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে জানা গেছে, বিদেশে বসে এই অফিসের সার্ভার নিয়ন্ত্রণ করা হত। এদিকে, আমির-কানেকশনে দিনভর তল্লাশি চালিয়ে, বিভিন্ন ৪ জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তাদের জেরা করে প্রতারণা চক্রের আরও গভীরে যেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।


আরও পড়ুন:মেনকা গম্ভীরের দায়ের আদালত অবমাননার মামলা খারিজ কলকাতা হাইকোর্ট