কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, বোলপুর: ফলক বিতর্কে অনড় অবস্থানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ফলক পরিবর্তনে না গিয়ে বরং পাল্টা আক্রমণ শানানো হল। ফলক বিতর্কে রবীন্দ্রপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন তুললেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, "রাবীন্দ্রিকরা যতই গলা ফাটান। নরেন্দ্র মোদিই বিশ্বভারতীর আচার্য। তাই ফলকে কোনও পরিবর্তন হবে না।" ফলকে লেখা নামগুলি অপ্রাসঙ্গিক, এমন দাবি করা কি মূর্খামি নয়? প্রশ্নও তুলল বিশ্বভারতী। (Visva Bharati Plaque)


বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্কে তপ্ত রাজ্য রাজনীতিও। কারণ UNESCO হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়ার পর যে ফলকগুলি বসানো হয়েছে, তাতে কোথাও বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই। বরং নাম রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। সেই নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এবার আক্রমণের পথে হাঁটলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। (Birbhum News)


বিশ্বভারতীর তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজকের বিশ্বভারতীর পণ্যে রূপান্তরিত হয়েছেন। রাবীন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে স্বার্থসিদ্ধির সোপান। তথাকথিত রাবীন্দ্রিকদের নিয়ে তাই একটা স্বাভাবিক প্রশ্ন উঠে আসে। এরা কতজন রবীন্দ্রনাথের সাধের দর্শনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন'?




বিশ্বভারতীর বিবৃতি।


আরও পড়ুন: Ration Scam : জ্যোতিপ্রিয়র সিএ-র নির্দেশে জমা পড়ত টাকা ! রেশনের কালো টাকা সাদা করতে বাঁকুড়ার ঠিকানায় জোড়া কোম্পানি


ফলক যে পরিবর্তন করা হবে না, তাও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। লেখা রয়েছে, ‘রাবীন্দ্রিকরা যতই গলা ফাটাক না কেন, এটা তো ঘটনা যে বর্তমানে আচার্য শ্রী নরেন্দ্র মোদি, যিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, আর উপাচার্য শ্রী বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এটার তো পরিবর্তন করা যাবে না। অতএব ফলকে এই নামগুলি অপ্রাসঙ্গিক, তা বলা মূর্খামি নয় কি’?


রবীন্দ্রনাথের হাতে তৈরি বিশ্বভারতী এবছর UNESCO হেরিটেজের স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বভারতীর এই প্রাপ্তিতে বাঙালির বুক গর্বে ভরে গেলেও, সেই নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।  বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহ, ছাতিমতলা এবং রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়ণের সামনে বসানো শ্বেতপাথরের ফলকে UNESCO হেরিটেজ প্রাপ্তির উল্লেখ থাকার পাশাপাশি, আচার্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং উপাচার্য হিসেবে বিদ্যুতের নাম লেখা রয়েছে। কিন্তু যে রবীন্দ্রনাথ তিল তিল জমা করে বিশ্বভারতীকে দাঁড় করিয়েছিলেন, কোথাও তাঁর নামের উল্লেখ  নেই। 


এর প্রতিবাদে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথের জন্য হেরিটেজ হয়েছে শান্তিনিকেতন, তাঁর নাম সরানো বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন। সেই নিয়ে মমতার ডাকে শান্তিনিকেতনে আন্দোলনও শুরু হয়েছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও এ নিয়ে বিশ্বভারতীর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু ফলক যে পাল্টানো হবে না, তা জানিয়ে দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।