সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: সেচ নালাই নেই, অথচ সেই নালা সংস্কারের কাজে বরাদ্দ হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে দুর্নীতির এই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা (local residents)। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন জয়েন্ট বিডিও। পশ্চিম মেদিনীপুরের (Pashchim Medinipur) নারায়ণগড়ের ঘটনা।


নালা নেই, অথচ বরাদ্দ টাকা


১০০ দিনের কাজে (100 Days Work) বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে সরগরম পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়। অভিযোগ, যে সেচ নালা বাস্তবে নেই, সেই নালা সংস্কারের জন্য ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ হয়েছে টাকা। শুধু তাই নয়, জঙ্গলের ভিতর নালা তৈরির কাজও শুরু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত বনদফতর এসে নালা তৈরির কাজ বন্ধ করে। 


নারায়ণগড়ের মকরামপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তালাচক গ্রামে সেচনালার সংস্কারে ১০০ দিনের কাজের আওতায় প্রায় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এ নিয়ে বোর্ডও লাগানো হয়। যেখানে সেচনালা নেই, সেখানে কীসের ভিত্তিতে সংস্কারের টাকা বরাদ্দ হয়েছে? এই প্রশ্ন তুলে নারায়ণগড়ের বিডিওর কাছে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।   


এখানে সেচনালা নেই, অথচ সেচনালা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে টাকা। মকরামপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় বাসিন্দা প্রধান সরেন বলেন, 'সেচনালা সংস্কার বোর্ডে লেখা আছে - কিন্তু এখানে সেচনালাই নেই। আমার বয়স সত্তর বছর। কোনওদিন এখানে সেচনালা ছিল না।'


এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলের ভিতর শুরু হয় সেচ নালা খোঁড়ার কাজ। কিন্তু বন দফতরের খড়গপুর ডিভিশন সূত্রে খবর, জঙ্গলে যে কোনও কাজ করতে গেলে বন দফতরের অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সেই অনুমতি না থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় কাজ। 


মকরামপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও প্রধান যোগেন্দ্রনাথ দলুই বলেন, 'বন দফতর কাজ বন্ধ রাখার জন্য চিঠি পাঠিয়েছে। বন দফতরের কিছুটা জমি পড়েছে ওখানে। হয়ত কিছুটা নালা ছিল, পুরোটা ছিল না, তাই হয়ত এলাকাবাসী এমন অভিযোগ করেছে।'


নারায়ণগড়ের বিডিও জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়ে জয়েন্ট বিডিও-কে পাঠানো হয়েছিল ঘটনাস্থলে। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার নারায়ণগড়ের জয়েন্ট বিডিও রামকৃষ্ণ হাঁসদা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


আরও পড়ুন: Cattle Smuggling Case: প্রভাবশালীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে কী ভূমিকা! অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গলকে আসানসোল নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই


ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক তরজা


মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির জেলা সহ সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, 'যে সেচনালা সংস্কার করার কথা বলা হয়েছে, সেই সেচনালা, ছিল না। তৃণমূলের এরকম অনেক কেস পাওয়া যাবে।'


মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, 'খোঁজ নিয়ে দেখব, বাস্তব কী আছে। বিজেপি যাই বলুক, বিজেপিকে বাংলার মানুষ ঘৃণা করে। ১০০ দিনের কাজে টাকা দিচ্ছে না। বাংলার শ্রমজীবী মানুষকে পেটে মারার চক্রান্ত করছে ওরা।' লিখিত অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা।