সমীরণ পাল, হাবড়া : তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদেরই অনাস্থা ! পুরভোট মিটতেই চেনা ছবি ফিরল বাংলার গ্রামীণ রাজনীতিতে। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে দলীয় প্রধানের অপসারণ চেয়ে বিডিওকে অনাস্থাপত্র দিলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা।


২০২১-এর বিধানসভা ভোটে রেকর্ড আসনে জয়ের পরও, একাধিক জেলায় বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলেরই অনাস্থার ছবি। মাসখানেক সেই প্রবণতায় ভাঁটা পড়লেও, পুরভোট মিটতেই পঞ্চায়েতে আবার ফিরল তৃণমূল বনাম তৃণমূল সংঘাত। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার কুমড়া গ্রামপঞ্চায়েতে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ডাকলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। 


বর্তমান প্রধান কাজে পারদর্শী নন। তিনি যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। তার জেরে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের অপসারণ চেয়ে হাবড়া ১ নম্বর ব্লকের বিডিও-কে চিঠি দিয়েছেন দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। 


কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও তৃণমূল নেতা চন্দন ঘোষ বলেন, প্রধানের আচার আচরণ ভাল নয়। মিটিংয়ে সদস্যদের কথা শোনা হয় না। সদস্যদের হুমকি দেন প্রধান। সবটাই দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।


কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন রত্না বিশ্বাস। তিনি এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। 


২৯ আসনের কুমড়া গ্রামপঞ্চায়েতের সবকটি রয়েছে তৃণমূলের দখলে। তারপরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অনাস্থা দেখে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি। হাবড়ার বিজেপি নেতা পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোট। কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও উন্নয়নের কাজ হয়নি। মুখরক্ষার জন্য তৃণমূল এখন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনছে।


অনাস্থা ইস্যুতে কড়া বার্তা দিয়েছে তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব। তৃণমূল কংগ্রেসে  (সংগঠন) রাজ্য সম্পাদক ধীমান রায় বলেন, এটা কোনও অ্যামেচার ক্লাব নয়। এটা রাজনৈতিক দল। সেখানে নিয়ম শৃঙ্খলা থাকে। নিয়ম হচ্ছে ব্লক সভাপতির সম্মতি লাগে। জেলা সভাপতি বা সংসদীয় সভাপতির সম্মতি লাগে। কিন্তু দলকে না জানিয়ে অনাস্থা ডাকব। রাস্তা অবরোধ করব। এসব জিনিস পার্টিতে বন্ধ হওয়া উচিত। ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।


তৃণমূল সূত্রে খবর, এর আগে গত জানুয়ারিতে কুমড়া গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ডাকা হয়েছিল। তৃণমূলের জেলা ও ব্লক নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলেও, আবার ফিরল অনাস্থা অস্বস্তি।