সমীরণ পাল, বারাসাত: ১৪ নভেম্বর শিশু দিবসের দিনেই বারাসাত মেডিকেল কলেজের বড় সাফল্য। শিশুদের দিনেই এক সদ্যজাত শিশুকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তার মায়ের হাতে তুলে দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মাত্র ২৭ সপ্তাহে ৮০০ গ্রামের সন্তানের জন্ম দেন আমডাঙার সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা রুবিনা খাতুন। সেই বাচ্চার জন্য যে যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন তা সাধারণত বি সি রায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেই সময় সে হাসপাতালে বেড না থাকায় বারাসাত মেডিকেল কলেজ নিজেরাই উদ্যোগ নেয় এই শিশুকে সুস্থ করে তোলার। দীর্ঘ ৭০ দিন ধরে হাসপাতালের চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল স্বরূপ এই মেডিকেল কলেজের মধ্যেই ওই শিশুকে রেখে তাকে বড় করে তোলা হয়।
এরই মধ্য়ে সেই বাচ্চার জন্ডিস ও শ্বাসকষ্টের সমস্য দেখা যায়। সেই ছোট্ট শিশুটিকে চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার ৭০ দিনের মাথায় বাচ্চাকে বাড়ি নিয়ে যেতে পেরে খুশি গোটা পরিবার। সরকারি হাসপাতালে এরকম পরিকাঠামোর মধ্যে এই রকম একটা ৮০০ গ্রামের শিশুকে বড় করে তোলা রীতিমত পুনর্জন্ম দেওয়া। পরিবারের অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন কিন্তু হাল ছাড়েননি হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল। তাঁর উদ্যোগেই এই সমস্ত চিকিৎসা পরিষেবা চলে গত ৭০ দিন ধরে। বাচ্চাকে সুস্থভাবে হাতে পেয়ে স্বভাবতই খুশি তার বাবা, মা ও পরিবার।
রাজ্যে সরকারি হাসপাতালগুলো অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। তার মধ্যে বারাসাত মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা নিঃসন্দেহে খুশির খবর। কিছুদিন আগেই এবিপি আনন্দে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে কলকাতা মেডিক্যালে বিক্রি হচ্ছে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ও জেনারেল বেড! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু এই অভিযোগের সপক্ষে কোনও তথ্য প্রমাণ পেল না হাসপাতাল গঠিত তদন্ত কমিটি। কলকাতা মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে এই মর্মে দেওয়া হয়েছে রিপোর্টও।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জোড়া অভিযোগ জানানো হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। অভিযোগ ছিল, কলকাতা মেডিক্যালের ক্রিটিকাল কেয়ার বেড এবং জেনারেল বেড বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। চড়া দামে বেড বিক্রি করে দিচ্ছে দালালরা। এর পাশাপাশি অভিযোগ ওঠে, কলকাতা মেডিক্যালের সেন্ট্রাল ল্যাবের টেস্ট কিট পাচার হয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। অভিযোগ করা হয় রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ও তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, এবং তৃণমূলের কর্মী ইউনিয়নের নেতা জয়ন্ত ঘোষের বিরুদ্ধে।