সুদীপ চক্রবর্তী, হেমতাবাদ : ১০২ নম্বরে ডায়াল করেও মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স ! অগত্যা, টোটোয় চাপিয়ে হাসপাতালে আনা হচ্ছিল অন্তঃসত্ত্বাকে। সেই টোটোতেই সন্তান প্রসব করলেন মহিলা। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে এলাকায়। উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দেউচি এলাকার কোড়াপাড়া গ্রামের ঘটনা। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
ঘটনাটি কী ?
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর ৩ টে নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা ওঠে হেমতাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দেউচি এলাকার কোড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত কোড়ার স্ত্রী কলাবতী নাগবংশীর। বহুবার ১০২ নম্বরে ফোন করা হলেও অ্য়াম্বুল্যান্স পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। ১০২-এ ফোন করা হলে কুয়াশার কারণে রাস্তা চিনতে পারবে না, তাই যেতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি পরিবারের। বেগতিক দেখে টোটোয় চাপিয়ে কলাবতীকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন পরিবারের লোকেরা। সেই সময় টোটোতেই সন্তান প্রসব করেন কলাবতী নাগবংশী। পরে তাঁকে এবং সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে।
ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার আন্দোলনে নামে স্থানীয় বিজেপি। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হেমতাবাদ স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বরে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হেমতাবাদ থানার পুলিশ। প্রসূতির স্বামী প্রশান্ত কোড়া জানিয়েছেন, রবিবার ভোরে তাঁর স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় বার বার ১০২ অ্যাম্বুল্যান্সে ফোন করা হয়। কিন্তু, অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায়নি। কুয়াশার কারণে রাস্তা চেনা যাচ্ছে না বলে জানানো হয় তাঁদের। পরে টোটো করে হাসপাতালের দিকে রওনা হওয়ার সময় টোটোতেই সন্তান প্রসব করেন স্ত্রী।
আন্দোলনরত হেমতাবাদের মণ্ডল সভাপতি বিপ্লব সরকার বলেন, "হেমতাবাদের BMOH নোটিস করে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা বন্ধ রেখেছেন। ফলে, অ্যাম্বুল্যান্স না আসায় টোটোতেই সন্তান প্রসব করেছেন মহিলা। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। কেন জরুরি পরিষেবা বন্ধ থাকল এবং কেন এই ঘটনা ঘটল, আমরা তার জবাব চাই BMOH-র কাছে। সেই কারণে আমরা অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছি।"
BMOH আনসারুল হক জানিয়েছেন, ১০২ অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু আছে। গত ১ ডিসেম্বর রাজ্যব্যাপী মাতৃযান পরিষেবা বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে আমরা নোটিস পাই। পরে মাতৃযান পরিষেবাও চালু হয়ে যায়। আমরা তা মিটিং ডেকে সকলকে জানিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি জানলাম। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। কারও গাফিলতি থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।