সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: ছোট্ট থেকেই বিপুল কৌতূহল। চারিদিকে যাই নজরে পড়ত তা নিয়ে তার প্রশ্নের শেষ থাকত না। সেই প্রশ্নবাণের থেকে রেহাই পেত না কেউ। বাবা-মা থেকে পরিবারের লোকজন। পাড়ার চেনা কেউ কিংবা অচেনা কোনও ব্যক্তি। মুখে কথার ফুলঝুরি আর অনর্গল এটা-ওটা প্রশ্ন শুনে নাজেহাল হয়ে যেত বাবা-মা। ছোটখাট ধমকও যে জুটত না তা নয়। কিন্তু তখন কেউই ভাবতে পারেনি এই কৌতূহলের জোরেই আর কয়েকদিন পরেই খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যাবে একরত্তি এই মেয়ে।


উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ। সেখানকারই বাসিন্দা পাল পরিবার। ওই পরিবারেরই ছোট্ট সদস্য আরাধ্যা পাল। বছর দুয়েকের এই খুদেই সকলকে চমকে দিয়েছে। তার নাম উঠে গিয়েছে 'ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস'-এ। ওই বইয়ে নাম তুলে সকলকে চমকে দিয়েছে ছোট্ট মেয়ে আরাধ্যা পাল। খুদের এই কীর্তিতে গর্বিত পাড়া-প্রতিবেশীরাও।  


রায়গঞ্জের (Raiganj) সুভাষগঞ্জ পালপাড়ার বাসিন্দা বিজয় পাল ও দীপা পালের কন্যা আরাধ্যা। বয়স মাত্র দুই বছর। এই বয়সেই গড়গড় করে বলে দেয় কবিতা। ঝরঝরে মুখস্ত বাংলা-ইংরেজির বর্ণমালা। শুধু তাই নয়। বিভিন্ন ফল ও আনাজের নাম। বা এদিক-ওদিক নানা জিনিসের নামও তার ঠোঁটস্থ। মেয়ের এই ক্ষমতা দেখার পরেই তার বাবা ভেবেছিলেন, এর কোনও স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা করা উচিত। মাস ছয়েক আগে 'ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস'-এর জন্য আবেদন করেন আরাধ্যার বাবা পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক বিজয় পাল। তারপরেই সম্প্রতি  'ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস' (India Book Of Records) কর্তৃপক্ষ আরাধ্যা পালের প্রতিভাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তার ক্ষমতার স্বীকৃতিস্বরূপ আরাধ্যা হাতে পেয়েছে মেডেল ও সার্টিফিকেট।


মেয়ের এই সাফল্যে ভীষণ খুশি আরাধ্যার (Aradhya Pal) পরিবার। কিন্তু কী ভাবে সম্ভব হল, এই রেকর্ড? আরাধ্যার মা দীপা পাল বলেন, 'অল্প বয়স থেকেই ওর মনে রাখার ক্ষমতায় অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমরা যা কিছু করতাম সব বিষয়ে প্রশ্ন করতো। জানতে চাইতো। এই প্রতিভা বুঝতে পেরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওর সঙ্গে কথা বলতাম। দেখতাম ও সব কিছু মনে রাখতে ও বলতে পারছে। ওর এই সাফল্যে আমরা খুশি।'


ছোট্ট আরাধ্যার এই কীর্তিতে গর্বিত পাড়া-পড়শিরাও। মাত্র দুই বছর বয়সে 'ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস'-এ ঠাঁই পাওয়া মেয়েটিকে শুভেচ্ছা জানাতে ভিড় করছেন তাঁরাও।


আরও পড়ুন: ঘোষিত সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার! তালিকায় বাংলার সাহিত্যিক স্বপ্নময় চক্রবর্তী