অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: রাতভর হাতির (elephants) তান্ডব (ruckus) সাঁকরাইলে (sankrail)। হঠাৎ করে গ্রামের (village) মধ্যে ঢুকে পড়ল দাঁতাল। সোমবার ভোর রাতের ঘটনায় গ্রামে বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি (damage) হয়েছে। আতঙ্কে গোটা গ্রাম।


কী ঘটেছে?
ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের ডুমুরিয়া গ্রামের রাত ১টা নাগাদ ২৫ থেকে ৩০টি হাতির একটি দল প্রবেশ করেছিল। গ্রামবাসীদের দাবি, সম্ভবত খাবারের সন্ধানেই আসে তারা। ভেঙে দেয় তপন মাহাতো নামে এক বাসিন্দার বাড়ি। অল্পের জন্য প্রাণে বাসিন্দারা। বাড়ির পাশে থাকা কয়েকটি কলাগাছ ভেঙে দেয় একটি হাতি। গভীর রাত। স্বাভাবিক ভাবেই স্ত্রী এবং দুই বাচ্চাকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন তপন মাহাতো। হঠাতই ঢুকে পড়ে হাতি। তাণ্ডবে তাঁদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। কিন্তু বাইরে বেরোতে পারেননি। দাঁতালের দল কোনওক্রমে তাঁদের বাড়ি ছেড়ে এগিয়ে যাওয়ার পর পালান মাহাতো পরিবারের সদস্যরা। তার পর গ্রামের বেশ কয়েকজন লোক মিলে একজোট হয়ে মশাল জ্বালিয়ে কোনও রকম ভাবে হাতিটিকে গ্রাম থেকে বের করেন। আতঙ্ক অবশ্য পুরোপুরি কমেনি এখনও। 


আগেও তাণ্ডব...
ঝাড়গ্রামের মানুষ হাতির হানার সঙ্গে একেবারে অপরিচিত নন। গত অগাস্টেই হাতির হানায় চারজনের মৃত্যুতে ঝাড়গ্রামে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই বার ঝাড়গ্রাম-জামবনি রাস্তা অবরোধ করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, বন প্রতিমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ঘটনা ঘটলেও তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি। প্রতিক্রিয়া জানতে মন্ত্রীকে ফোন করা হলেও তাঁর ফোন ছিল সুইচড অফ। বস্তুত, খোদ ঝাড়গ্রাম শহরে হাতির আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে বাসিন্দাদের। ওই সময়ই পরপর দু’দিনে হাতির হানায় ৪ জনের মৃত্যু হয়। সেই প্রাণহানি নিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। জানা যায়, ঝাড়গ্রামের তৃণমূল বিধায়ক ও বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার বাড়ির কাছে বুধবার ২টি পূর্ণবয়স্ক হাতি ও একটি হস্তিশাবক হানা দিয়েছিল। চারজনকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় দেয় দু’টি হাতি। মৃত্যু হয় ২ জনের।  সেখান থেকে তাড়া খেয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চলে আসে তিনটি হাতি। সেখানে হাতির হানায় মৃত্যু হয় এক মহিলার। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আহত একজনের। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাতির হানায় পরপর মৃত্যুর পরও ঘটনাস্থলে আসেননি বন প্রতিমন্ত্রী। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছিলেন, 'হাতির হামলা প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রী বলেন দুয়ারে দুয়ারে যাবেন। উনি দুয়ারে আসছেন না। হাতি দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে। বন আধিকারিক ফোন ধরেননি না। বন প্রতিমন্ত্রী ঘটনাস্থলে আসেন না'। কবে টনক নড়বে প্রশাসনের? প্রশ্ন থাকছেই।


আরও পড়ুন:পাখির চোখ, বিধানসভা ভোট, অভিষেককে সঙ্গে নিয়ে আজ মেঘ-রাজ্যে মমতা