শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: মেখলিগঞ্জ (Mekhligunj), নন্দীগ্রামের (Nandigram) পর এবার কোচবিহারের (Coochbehar) শালবাড়ি (shalbari)। পঞ্চায়েত অফিসে (Panchayat Office) রাতের অন্ধকারে (Late) কী কাজ? প্রশ্ন তুলে প্রধান-সহ বেশ কয়েক জনকে তালা (Locked) বন্ধ করে বিক্ষোভ (agitation) দেখানোর অভিযোগ উঠল বিজেপি (BJP) কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ এসে তালা খুলে উদ্ধার করে তাঁদের। ঘটনার খবর ছড়াতেই চাঞ্চল্য এলাকায়।


কী ঘটেছিল?
ঘটনার সূত্রপাত গত কাল রাতে। বক্সিরহাটের শালবাড়ি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের অফিসে এই ঘটনায় এলাকায় হইচই পড়ে গিয়েছে। শোনা যায়, রাত পর্যন্ত বেশ কয়েক জন পঞ্চায়েত কর্মী সেখানে কাজ করছিলেন। বিষয়টি লক্ষ্য করেন বিজেপি কর্মীরা। শুধু তা-ই নয়। অভিযোগ, পঞ্চায়েত অফিসে তালাও লাগিয়ে দেন। তাঁদের দাবি, যেহেতু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির আধিকারিকরা বিভিন্ন কাজ খতিয়ে দেখার জন্য জেলায় জেলায় ঘুরছেন, তাই দুর্নীতির প্রমাণ লোপাট করতেই রাত জেগে কাজ করছিলেন পঞ্চায়েত কর্মীরা। এ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তালা খুলে উদ্ধার করা হয় পঞ্চায়েত প্রধান ও বাকি কর্মীদের। গত রাতেই এই ঘটনায় গ্রেফতার ৩ বিজেপি কর্মী। তবে তাঁদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে আজ বক্সিরহাট থানা ঘেরাও করে বিজেপি। তুফানগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা রায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ছিলেন ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মনও। ধৃত কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে ধর্নায় বসেন দুই বিধায়ক। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে থানা-চত্বরকে। গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা গেট ভেঙে থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে তাঁদের অবশ্য সরিয়ে দেয়। শেষ যা জানা গিয়েছে তাতে, ওই তিন জন বিজেপি কর্মীকে তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতে পেশ করেছিল পুলিশ। তাঁদের ১৪ দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজত হয়েছে। 


পর পর এক ঘটনা...
গত ৭ আগস্ট কার্যত এক অভিযোগ শোনা গিয়েছিল নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ও বিজেপি কর্মীরা অভিযোগ করেন, রাত ৯টা পর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিস খোলা রেখে আসলে তথ্যপ্রমাণ সরানোর কাজ করছেন পঞ্চায়েত কর্মীরা। তবে সে বার শুধু অভিযোগ করেই থামেনি পদ্মশিবির। পর দিন ঘটনার প্রতিবাদে অঞ্চল অফিসের সামনে বিক্ষোভও দেখায় তারা। এ নিয়ে উত্তেজনা বাড়লে শেষমেশ পুলিশকে এসে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কম-বেশি এক অভিযোগ শোনা গিয়েছিল কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে। স্থানীয়দের একাংশ দাবি করেন, রাত সাড়ে ১১টা-১২টা পর্যন্ত মেখলিগঞ্জে মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের দফতরে আলো জ্বলছিল। 'কাজ' করছিলেন বেশ কয়েক জন সরকারি আধিকারিক। কিন্তু মাঝ রাতে সরকারি দফতরে কী কাজ চলতে পারে,এই নিয়েই সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা দফতরে পৌঁছে যান। আসেন কয়েক জন বিজেপি নেতাও। আধিকারিকদের কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে অভিযোগ পদ্মশিবিরের। আধিকারিকদের তালাবন্ধ রেখে পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাঁদের। বিজেপি-র দাবি, বাম আমলে খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পরেশ অধিকারী যে একাধিক দুর্নীতি করেছিলেন তার তথ্য়প্রমাণ পাচার করতেই মাঝরাতে কাজ করছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই পরেশ অধিকারী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূল জেলা কংগ্রেস সভাপতিও জানিয়েছিলেন, খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
এবার ঘটনা কোচবিহারের শালবাড়িতে। 


আরও পড়ুন:কাল থেকেই বদলে থাচ্ছে আবহাওয়ার হালহকিকত, চোখ রাঙাচ্ছে নিম্নচাপ