গৌতম মণ্ডল, কুলপি : এক-দু'জায়গায় নয়। রাস্তা তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। স্থানীয় বাসিন্দারা সরব হলেও, হুঁশ ফিরছে না ঠিকাদার সংস্থাগুলির। তা আরও একবার সামনে চলে এল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Paragana) জেলার সাগরের পর এবার কুলপিতে (Kulpi) প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার নির্মীয়মাণ রাস্তা (Under Construction Road) তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিল গ্রামবাসী।


কুলপি ব্লকের করঞ্জলি গ্রাম পঞ্চায়েতের দামোদরপুর থেকে শ্যামনগর হয়ে রাঙাফলা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়েছিল। রাস্তা তৈরির জন্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় প্রায় ৫১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। গত দু'দিন আগে রাস্তার কাজ শুরু করে ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, রাস্তা তৈরি করার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পিচ সহ স্টোনচিপ উঠে যাচ্ছে। হাত দিয়ে টানলেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার সামগ্রী।


এই ঘটনায় গ্রামবাসী প্রতিবাদ জানানোর পর থেকে রাস্তা তৈরির যন্ত্রাংশ ফেলে রেখে বেপাত্তা ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অভিজিৎ বৈরাগী। তিনিও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি নিয়ে সরব হয়েছেন। 


অন্যদিকে কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার জানান, যদি খারাপ কাজ হয়, তাহলে গ্রামবাসীর প্রতিবাদ জানানোর অধিকার রয়েছে। যারা কাজ করছে তাদের উচিত সঠিকভাবে কাজ করা।


দিনকয়েক আগে একইরকম অভিযোগ ওঠে বাঁকুড়া জেলায়। হাত দিয়ে টানাটানি করলেই উঠে আসছে পিচ। বেশি চলাফেরা করলেই ভেঙে যায় রাস্তা। রাস্তার মান নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ ওঠে। বাঁকুড়ার সিমলাপালের সেই রাস্তা তৈরি হয় পথশ্রী প্রকল্পে। ফলে তাতে জড়িয়ে পড়ে রাজনীতিও। একদিকে খারাপ রাস্তা নিয়ে তৃণমূলকে (TMC) নিশানা করে বিজেপি (BJP)। অন্যদিকে পাল্টা কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপান তৃণমূল বিধায়ক। রাজনৈতিক তরজা যাই হোক, রাস্তার হাল নিয়ে তুমুল ক্ষোভ ছড়ায় সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে।


নামেই পিচের রাস্তা, আদতে কাঁচা রাস্তার উপর আলগা পিচের আস্তরণ। বাঁকুড়ার (Bankura) সিমলাপালের মাচাতোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শুশুনিয়া মোড় থেকে কাঁসাচরা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। সেই গোটা রাস্তার পরিস্থিতি এমনটাই। পথশ্রী (Pathasree) প্রকল্পের রাস্তার এমন দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার বাসিন্দারা। রাস্তা (Bad Road Condition) এভাবে কেন তৈরি করা হবে তা নিয়ে তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। সিমলাপালের বাসিন্দা মধুসূদন পাণ্ডা বলেন, 'পথশ্রী যদি হত তা হলে তো হাতে উঠে যেত না। তা হলে গাঁইতি দিয়ে তুলতে হতো। পকেটশ্রী পকেট। ডান পকেট বাঁ পকেটের শ্রী।'