অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: কাশফুলের ঝাঁকে মন খারাপের হাওয়া। আজ মহানবমী। না পোহায় যেন নবমী নিশি। বাংলার ঘরে ঘরে কাতর প্রার্থনা। শেষবেলার আনন্দটুকু চেটেপুটে নিতে ব্যস্ত উৎসবপ্রিয় বাঙালি। পুজোর আনন্দ উসুল করতে সকাল থেকেই পথে নেমেছেন মানুষ। ফাঁকায় ফাঁকায় অনেকেই দেখে নিতে চান সেরা পুজোগুলি। উত্তর থেকে দক্ষিণ, সমস্ত পুজো মণ্ডপেই মানুষের ঢল।
এদিকে, নবমীতে বেলুড় মঠে বিশেষ পূজার্চনা। ভোরবেলা পুজো শুরু হয়। দুপুরে বিশেষ হোমযজ্ঞ হবে। দেওয়া হবে চালকুমড়ো, শসা, কলা-সহ ফল বলি। এরপর চলবে অঞ্জলি দেওয়া। বিতরণ করা হবে খিচুড়ি ভোগ। পুজোর ক’দিন সারাদিন খোলা রয়েছে বেলুড় মঠের দরজা।
দুর্গাপুজোর যেটি বহুল প্রচলিত রূপ- তা হল ষষ্ঠাদি কল্প। এই নিয়ম অনুযায়ী মহানবমীর পুজা অন্তিম পুজা। সংকল্পে 'মহানবমী যাবৎ' এর সংকল্প গ্রহণ করা হয়। চণ্ডিপাঠ, দুর্গানাম জপ মহানবমী অবধি অনুষ্ঠানের সংকল্প নেওয়া হয় বোধনের দিন। সেই মতো মহানবমীতে হোমের মাধ্যমে দেবীর সংকল্পিত মহাপুজার ইতি ঘটে। এরপর দশমী পুজা শুধুমাত্র দেবী বিদায়ের আচরিত সংক্ষিপ্ত পুজা।
এই পূজার ৭টি কল্প বিহিত আছে- এই সকল ৭টা কল্পের মধ্যে সামর্থ্যানুসারে যে কোন কল্পে পূজা করা হয়। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণানবমী হতে আশ্বিন মাসের মহানবমী পর্যন্ত যে পূজা করা হয়, তাকে নবম্যাদি কল্প বলে। আশ্বিন মাসের শুক্ল প্রতিপদ হতে মহানবমী পর্যন্ত যে পূজা করা যায়, তাকে প্রতিপদাদি কল্প, আশ্বিন শুক্লাষষ্ঠী হতে মহানবমী পর্যন্ত ষষ্ঠ্যাদি কল্প, সপ্তমী হতে মহানবমী পর্যন্ত সপ্তম্যাদি কল্প, মহাষ্টমী হতে মহানবমী পৰ্যন্ত অষ্টম্যাদি কল্প, কেবল মহাষ্টমীর দিন অষ্টমীকল্প, এবং মহানবমীর দিন নবমীকল্প; এই সপ্তবিধকল্প উল্লেখ করা হয়েছে। এই সপ্তবিধ কল্পদ্বারা এর নিত্যত্ব প্রতিপাদিত হয়েছে।
মহানবমীর (Maha Nabami) পুজো শারদীয়া মহাপুজা নামে খ্যাত। কালিকাপুরাণে (Kalika Puran) বলা হয়েছে, নবম্যাং বলিদান্তু কর্ত্তব্যং বৈ যথাবিধি। জপং হোমঞ্চ বিধিবৎ কুর্য্যাত্তত্র বিভূতয়ে॥ (তিথিতত্ত্ব)- অর্থাৎ বিভূতি লাভের জন্য নবমী তিথিতে যথাবিধি বলিদান করা কর্তব্য। তার সঙ্গে জপ ও হোম করা হয়। এক্ষেত্রে জপ বলতে চণ্ডিপাঠ এবং চণ্ডিজপ বোঝায়।