পূর্ব বর্ধমান: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খিচুড়িতে টিকটিকি, অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য খণ্ডঘোষে। খিচুড়িতে টিকটিকি, খাবার খেয়ে অসুস্থ কয়েকজন পড়ুয়া, দাবি স্থানীয়দের। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসায় গ্রামে গেল মেডিক্যাল টিম। 'গাইডলাইন মেনে দেওয়া হয়নি খাবার, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে'। আশ্বাস ব্লক চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অফিসারের ।
আগেও একাধিক অভিযোগ: এর আগে কার্যত ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ উঠেছিল মিড ডে মিল নিয়ে। প্রকল্পের (Midday Meal Project) হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে গত ফেব্রুারিতেই ৮ দিনে ৮ জেলায় ঘুরে দেখেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা (Central Team)। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা। পরিদর্শনের পর ফের বিকাশ ভবনে বৈঠক করেন জয়েন্ট রিভিউ মিশনের প্রতিনিধিরা।
মিড ডে মিলের বাস্তবায়ন খতিয়ে দেখতে ৮ দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। এর পর সোমবার বিকাশ ভবনে বৈঠক সারলেন জয়েন্ট রিভিউ মিশনের প্রতিনিধিরা। রাজ্যে মিড ডে মিল নিয়ে সামনে এসেছে একাধিক অভিযোগ। কোথাও মিড ডে মিলের মধ্য়ে মিলেছে সাপ। কোথাও ড্রামে পাওয়া গেছে মরা ইঁদুর। কোথাও খিচুড়ির মধ্য়ে টিকটিকি মেলার অভিযোগ। আর ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই মিড ডে মিলের বাস্তবায়ন খতিয়ে দেখতে ২৯ জানুয়ারি রাজ্য়ে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। মিড মিলের সুবিধা কারা পাচ্ছে ? রাজ্য সরকার স্কুলগুলিকে কীভাবে টাকা পাঠাচ্ছে ? যে টাকা স্কুলগুলিতে বরাদ্দ হচ্ছে, তা কতটা কার্যকরী হচ্ছে ? মিড ডে মিলের পরিকাঠামো কেমন ? রান্নাঘরের কী অবস্থা ? ছাত্র-ছাত্রীরা পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে কি না ? খাবার পরীক্ষা হয় কিনা ? গত ৮ দিনে ৮ জেলার ৩০টি স্কুলে রাজ্য় সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে, তারা খতিয়ে দেখেন।
পুলিশ-পাহারায় স্কুলে মিড ডে মিল রান্না: স্কুলের হলঘরে পড়ুয়াদের জন্য রান্না হচ্ছে মিড ডে মিল। আর মিড ডে মিল রান্না নিয়ে যাতে কোনও অশান্তি না হয়, তার জন্য বাইরে পাহারায় রয়েছে পুলিশ। গোটা স্কুলচত্বর একেবারে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। গন্ডগোল এড়াতে মোতায়েন করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও। কিছুদিন আগে এমনই ছবি দেখা গেল পুরুলিয়ার ঝালদা এক নম্বর ব্লকের কেনদুয়াডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পুলিশের পাহারায় স্কুলে মিড ডে মিল রান্না। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তার তদারকি করেন খোদ বিডিও। ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও রাজকুমার বিশ্বাস বলেছিলেন, “কোনওভাবেই মিড ডে মিল বন্ধ রাখা যাবে না। যদি কেউ মিড ডে মিল বন্ধ করতে আসেন, তিনি আইনের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।’’
কিন্তু পুলিশের পাহারায় স্কুলে মিড ডে মিল রান্না করতে হচ্ছিল কেন? ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের ইচাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কেনদুয়াডি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল সূত্রে খবর, কে করবে মিড ডে মিল রান্না? তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাত চলছে গ্রামের ৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে। কেনদুয়াডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে রান্নার দায়িত্বে রয়েছে মহাবীর সঙ্ঘ মহিলা সমিতি নামের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। গ্রামে ৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও, কেন একটি গোষ্ঠীই মিড ডে মিল রান্নার বরাত পাবে, সেই প্রশ্ন তুলে বিরোধিতায় সরব হয় বাকি ৭টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। ২০১৭ সালে বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় প্রথম থেকে মিড ডে মিল রান্না করে আসা স্বনির্ভর গোষ্ঠী।