কলকাতা : বর্ষায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তে জেরবার রাজ্য। বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক আক্রান্তের খবর সামনে আসছে। যা নিয়ে এমনিতেই ত্রস্ত বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এই আতঙ্কের মধ্যেই ফের কোভিড আক্রান্ত হয়ে জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় বাড়ল চিন্তা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হল ৬০ ও ৬১ বছরের দুই করোনা রোগীর।
বর্ষা এলেই বাড়ে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ। এবারও তার অন্যথা হয়নি। তবে, গতবারের তুলনায় এবার রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নবান্নে এনিয়ে রিপোর্টও জমা পড়েছে। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৪০১।
স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গতবছর এই সময় রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৫০। শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন। এবার গ্রামীণ এলাকা থেকে ডেঙ্গি আক্রান্ত ৭২ শতাংশ, শহর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ২৮ শতাংশ। নদিয়ার ডেঙ্গি আক্রান্তদের সংখ্যা সবথেকে বেশি।
স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে উল্লেখ, চলতি বছরে শুধু জুলাই মাসেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর মৃতের সংখ্যা ৮ বলে দাবি করেছেন।এবার আবার ডেঙ্গির দোসর ম্যালেরিয়া। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ৪ জন ভর্তি রয়েছেন বলে দিন দু'য়েক আগেই জানা যায়। এদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও একজন মহিলা। এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ৪ জন। কলকাতার পাশাপাশি, সল্টলেকেও ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত।
এই পরিস্থিতিতে বর্ধমানে করোনায় দুই জনের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা বাড়িয়েছে। বর্ধমান শহর লাগোয়া দেওয়ানদিঘি ও ভাতারের বাসিন্দা দুই রোগীর কো-মর্বিডিটিও ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
রবিবার সন্ধেয় মৃ্ত্যু হয় ভাতারের ৬০ বছরের প্রৌঢ়ের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, কিডনির সমস্যায় ভোগার পাশাপাশি, তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। গতকাল সকালে মৃত্যু হয় দেওয়ানদিঘির বাসিন্দা ৬১ বছরের প্রৌঢ়ের। ডেথ সার্টিফিকেটে কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেলিওর ছাড়াও কোভিডের উল্লেখ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনার জেরে দীর্ঘদিন ত্রস্ত ছিল গোটা বিশ্ব। বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই প্রকোপ থেকে বাদ পড়েনি ভারতও। কিন্তু, ধীরে ধীরে সেই অতিমারি পর্ব কাটিয়ে উঠেছে মানুষ। ছন্দেও ফিরেছে জীবনযাপন। সচল হয়েছে অফিস-কাছারি। এরই মধ্যে ফের করোনায় মৃত্যুতে নতুন করে আতঙ্ক দানা বাঁধল।