সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: হাসপাতালে ভবন রয়েছে। বেড রয়েছে। কিন্তু আসল জিনিসটাই নেই--চিকিৎসা। হাসপাতালের (Hospital)ভিতরে সবকটা শয্যা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ভর্তি করা হচ্ছে না কোনও রোগী। কারণ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো ডাক্তারই নেই। এমনই ছবি পুরুলিয়ার (Purulia) বলরামপুর ব্লকের বাঁশগড় গ্রামীন হাসপাতালে। 


বন্ধ পরিষেবা:
পরিস্থিতি এমনই যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অভ্যন্তরীণ বা ইনডোর (Indoor) পরিষেবা বন্ধ করার ঘোষণা করতে হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই হাসপাতালের ইনডোর এবং আপৎকালীন বা জরুরি (Emergency) পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত চলবে শুধুমাত্র আউটডোর (Outdoor) বা বহির্বিভাগ। কোথায় চিকিৎসা পাওয়া যাবে সেই পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। আপৎকালীন ক্ষেত্রে বা প্রসব সংক্রান্ত বিষয়ে নিকটস্থ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 


কেন বন্ধ:
মঙ্গলবার, ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তরফে, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, পর্যাপ্ত চিকিত্‍সক (Doctor) না থাকায়, হাসপাতালের জরুরি ও অভ্যন্তরীণ পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। 


চরম ভোগান্তি:
পুরুলিয়া (Purulia) রাজ্যের একেবারে পশ্চিমের জেলা। জঙ্গলমহলের অংশ। যে হাসপাতালে এমন ঘটেছে সেটি পুরুলিয়ার বলরামপুরে। জেলার এই এলাকায় একেবারে ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) সীমানায় রয়েছে। গ্রামীন এই এলাকায় বহু মানুষ সামান্য স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপরই নির্ভরশীল। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা না পেলে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন তাঁরা। আপৎকালীন ক্ষেত্রে দূরের কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া, দূরের হাসপাতালে যেতে গাড়ির জোগাড় করা, খরচ সামলানোও একটা বড় বিষয়। এই গ্রামীন হাসপাতালে শুধু যে জেলার রোগী আসেন তা নয়, লাগোয়া ঝাড়খণ্ড থেকেও অনেক রোগী চিকিৎসার জন্য এখানে আসেন। ফলে জরুরি ও ইনডোর পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবল উদ্বেগে রয়েছে এলাকার রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা।  


কী বলছে স্বাস্থ্য-প্রশাসন:
পরিস্থিতির কথা মেনে নিয়েছেন বলরামপুর ব্লকের মেডিক্যাল অফিসার শুভাশিস মুদি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কুণালকান্তি দে। তিনি বলেন, 'বাঁশগড় গ্রামীণ হাসপাতালে এবং জেলায় চিকিৎসক সংকট রয়েছে । তবে শীঘ্রই ওই হাসপাতালে ২ জন এবং জেলায় মোট ১০ জন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হবে।'


আশ্বাস মিলেছে ঠিকই, কিন্তু সেই কাজ কবে হয় তারই অপেক্ষায় সাধারণ বাসিন্দারা।


আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার জন্য বিশেষ রাখি, উপহার পাঠাল বনগাঁ পুরসভা