ভাস্কর ঘোষ, হাওড়া: রামকৃষ্ণলোকে পাড়ি দিয়েছেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ। বহুদিন ধরে শরীর লড়াই করছিল বিভিন্ন রোগের সঙ্গে। অবশেষে ইহজগতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল তাঁর দেহ। রাতেই গুরু-মহারাজের মহাপ্রয়াণের খবর পান ভক্তরা। আর বুধবার তাঁর দেহকে শেষ বারের মতো প্রণাম জানাতে মঠ প্রাঙ্গণে ভিড় জমাতে শুরু করেন ভক্তরা। 


মঙ্গলবার কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে রাত ৮ টা ১৪ মিনিটে দেহত্যাগ করেন স্বামী স্মরণানন্দ।  তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। মঠের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে, জ্বর এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে গত ১৮ জানুয়ারি তাঁকে কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ২৯ জানুয়ারি তাঁকে কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সর্বোত্তম উপলব্ধ চিকিৎসা সত্ত্বেও, ধীরে ধীরে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে তাঁর। অবশেষে তিনি নশ্বর শরীর ত্যাগ করলেন মঙ্গলবার। 


মঠ কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, বুধবার শেষকৃত্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বেলুড় মঠের দরজা খোলা থাকবে।  বেলুড় মঠের প্রয়াত অধ্যক্ষ মহারাজকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার ভোর থেকেই অগণিত ভক্ত এবং দীক্ষিতের সমাগম হয়েছে মঠ প্রাঙ্গণে। সেখানেই শায়িত তাঁর দেহ। মঙ্গলবার রাত্রি থেকেই সারিবদ্ধ ভাবে শিষ্য ও ভক্তরা একে একের ফুল মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন । বুধবার ভোরে দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসতে শুরু করেন। মঠ সূত্রে খবর , বুধবার সন্ধে ৭ টা অবধি বেলুড় মঠে মহারাজের দেহ শায়িত  থাকবে ভক্ত এবং দীক্ষিতদের শেষ শ্রদ্ধা জানাবার জন্য। রাত ন'টায় বেলুড় মঠেই তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হবে।. 


মঠ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে,  রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের  গুরুর মহাসমাধির পরে কী কী ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতে হয়,   রামকৃষ্ণ সংঘ দ্বারা তেমন কোনও নির্ধারিত আচার বা বিধি নেই। সঙ্ঘ সবসময় আধ্যাত্মিক ও বিশুদ্ধ জীবন যাপন, জপ, ধ্যান, প্রার্থনা, স্তোত্র উচ্চারণে জোর দিয়ে থাকে, যা মনকে ঈশ্বরমুখী করে।  ১৩ দিন বা কমপক্ষে ৩ দিনের জন্য হবিষ্যন্ন (সাধারণ সিদ্ধ চাল এবং ঘি এবং লবণ সহ সবজি) এবং ফল  ভক্ষণ করা যেতে পারে। 


স্বামী বিবেকানন্দর শিবজ্ঞানে জীব সেবার আদর্শ শুধু মুখে বলা না, তা জীবনে আত্মস্থ করেছিলেন স্বামী স্মরণানন্দ। তাঁর রামকৃষ্ণলোকে গমনের খবর শোনার পর থেকে তাই ভক্তদের চোখের জল বাঁধ মানছে না।