রাজা চট্টোপাধ্যায়, অরিন্দম সেন: রামপুরহাটকাণ্ডে (Rampurhat) ১৮ বছরের বেশি পুরনো হত্যালীলার স্মৃতি ফিরল আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) দলগাঁও চাবাগানে। ২০০৩ সালের ৬ নভেম্বর জনরোষের জেরে এক সিটু নেতার কোয়ার্টারে ২২ জনকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের নৃশংস ঘটনা উসকে দিয়েছে সেই হাড়হিম করা আতঙ্কের স্মৃতি।
রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের এই ভয়াবহতা বুক কাঁপিয়ে দিয়েছে, প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরের আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বীরপাড়ার দলগাঁও চা বাগানের বাসিন্দাদের!
ঠিক ১৮ বছর ৪ মাস আগে, অবিভক্ত জলপাইগুড়ির এই চা বাগানের এক বীভৎস ঘটনা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল গোটা রাজ্যে!
৬ নভেম্বর, ২০০৩, আলিপুরদুয়ারের দলগাঁও চা বাগানের, তৎকালীন সিটু নেতা তারকেশ্বর লোহারের কোয়ার্টার ঘিরে ফেলে ২২ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।
আলিপুরদুয়ারের দলগাঁও চা বাগানের শ্রমিক সরোজ চিক বরাইকের কথায়, আমি ঘটনার দিন স্কুলে ছিলাম। ফিরতেই বাবা বলল কী হয়েছে। তারপর টিভিতে দেখলাম। এখনও ওই দিন মনে পড়লে গায়ে কাঁটা দেয়। এখনও চোখে ভাসে সেই দিন।
তখন সরকারে বামেরা। জানা যায়, সেই সময় দলগাঁও চা-বাগানে কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত। এলাকার পুরনো বাসিন্দাদের দাবি,সেই সময় চা বাগানের কেরানি পদে নিয়োগের দাবিতে সরব হন এলাকার যুবকদের একাংশ।
কিন্তু অভিযোগ, নিয়োগের রাশ হাতে রেখেছিল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর স্থানীয় নেতৃত্ব। প্রতিবাদে ২০০৩ সালের ৬ নভেম্বর দলগাঁও চা বাগানে গেট মিটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বিক্ষুব্ধরা।
অভিযোগ, তারকেশ্বর লোহার নামে এক সিটু নেতা গেট মিটিং বানচাল করতে নিজের কোয়ার্টারে বহিরাগত সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের জড়ো করেন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, তা জানতে পেরে বিক্ষুব্ধদের একাংশ, সিটু নেতার কোয়ার্টার ঘিরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
২২ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে ফেরাল দলগাঁওয়ের স্মৃতি বাম-তৃণমূল তরজা তুঙ্গে
বীরপাড়া তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি মান্নালাল জইনের কথায়, সমাজবিরোধীদের জোগাড় করেছিল সিটু ইউনিয়নের নেতারা। বোমা বারুদ বন্দুক অস্ত্র জোগাড় করা হয়েছিল।
আলিপুরদুয়ারের বামফ্রন্ট আহ্বায়ক কিশোর দাসের কথায়, এক ঘটনার উদাহরণ টেনে আরেকটা ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা। রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতা সেই ভয়ের স্মৃতি উসকে দিয়ে গেল দলগাঁওয়ের বাসিন্দাদের মনে।