ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, অবশেষে শিক্ষিকা পদে নিয়োগপত্র পেলেন শিলিগুড়ির অনামিকা রায়। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও ৪ মাস পর নিয়োগপত্র মিলল অনামিকার। সোমবার হাইকোর্টের ভর্ৎসনার ২ ঘণ্টার মধ্যে ওয়েবসাইটে অনামিকার নাম তোলে এসএসসি। আজ ডিরোজিও ভবনে নিয়োগপত্র হাতে পান অনামিকা রায়। (Recruitment Scam)
তৎকালীন মন্ত্রী-কন্যা অঙ্কিতার জায়গায় ববিতা এবং ববিতার পর চাকরি পেলেন অনামিকা। নম্বরে কারচুপির অভিযোগে চাকরি যায় তৎকালীন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikari)মেয়ে অঙ্কিতার। পরেশ-কন্যার জায়গায় চাকরি পান ববিতা সরকার। ভুল তথ্য দেওয়ায় চাকরি হারান ববিতাও। এরপরই মেধাতালিকায় নাম থাকা পরবর্তী দাবিদার হিসেবে মামলা করেন অনামিকা।
সোমবার হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল এসএসসিকে। তারপরেই রাতের মধ্যেই ওয়েবসাইটে নাম উঠে যায় অনামিকা রায়ের।
নিয়োগপত্র হাতে নেওয়ার পর কী বলছেন অনামিকা? এদিন তিনি বলেন, 'বিচারব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা ছিল, আজও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আইনিপথ যদি অবলম্বন না করতাম তাহলে আমি চাকরিটা পেতাম না। মহামান্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে শতকোটি প্রমাণ। আমার মতো এখনও অনেক যোগ্য চাকরিপ্রার্থী আছেন, তাঁদের বলব তাঁরা যেন বসে না থেকে আইনি পথ অবলম্বন করেন।'
যে চাকরিপ্রার্থীরা এখনও রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন তাঁদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। এদিন তিনি বলেন, 'এটা খুবই খারাপ লাগার জায়গা। তাঁরাও তাঁদের সমস্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় বসে আছেন। তাঁদের সমস্যার যেন দ্রুত সমাধান হয়। তাঁরা যেন তাড়াতাড়ি স্কুলে যেতে পারে, তাহলে সেটা আমার সম্পূর্ণ আনন্দের দিন।'
কী হয়েছিল সোমবার:
শিলিগুড়ি পুলিশের (Siliguri Police) কাছে হাইকোর্ট (High Court) রিপোর্ট তলব করেছিল। তারপরই পর্ষদের ওয়েবসাইটে ওঠে অনামিকা রায়ের নাম। দুপুরে শিলিগুড়ি পুলিশের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছিল কমিশন। বলা হয়েছিল, পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়নি। হাইকোর্টে এমন দাবি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারের জন্য ডাক এসএসসি-র, দাবি করেছিলেন অনামিকা। দুপুরে হাইকোর্টে এসএসসি দাবি করে, 'পুলিশ ভেরিফিকেশন অসম্পূর্ণ থাকায় ৪ মাস পরেও চাকরি পাননি অনামিকা।' কিন্তু অনামিকা রায় পাল্টা দাবি করেন, 'পুলিশ ভেরিফিকেশন আগেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে, রিপোর্ট চলে গিয়েছে পর্ষদের অফিসেও।' আদালত প্রশ্ন করে, 'অনামিকা জঙ্গি নন, চাকরিপ্রার্থী, কেন হয়নি পুলিশ ভেরিফিকেশন?' পরদিন বেলা ১২টার মধ্যে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের কাছে রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তারপরই পর্ষদের ওয়েবসাইটে অনামিকাকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দিতে নোটিস এসএসসি-র, দাবি অনামিকার।
আরও পড়ুন: বাংলায় আরও একটি বন্দে ভারত, কোন রুটে চলবে সেই এক্সপ্রেস?