সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, দীপক ঘোষ, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : চেক কিংবা ডিজিটাল পেমেন্ট নয়, একেবারে নগদের বিনিময়েই অযোগ্য প্রার্থীদের দেওয়া হত স্কুলে চাকরির নিয়োগপত্র। আদালতে বিস্ফোরক দাবি করল সিবিআই। তাহলে কি অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বিক্রি করে পাওয়া টাকাই মজুত করা হয়েছিল অর্পিতার ফ্ল্যাটে? উঠছে প্রশ্ন। শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও দুই মিডলম্যানকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল CBI’এর বিশেষ আদালত।


এ যেন একেবারে ‘ফেল কড়ি মাখো তেল’। নগদের বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের দেওয়া হত স্কুলে চাকরির নিয়োগপত্র। বৃহস্পতিবার SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও দুই মিডলম্যানকে আদালতে পেশ করে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল CBI। আগেই ED আদালতে দাবি করেছিল , চাকরি বিক্রি করে পাওয়া টাকাই রাখা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে। 

এমনকী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াত স্ত্রীর নামে তৈরি বিসিএম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলেও নিয়োগ দুর্নীতির মোটা অঙ্কের টাকা ঢুকেছিল বলে দাবি করেছিল ED। কিন্তু, অবৈধভাবে স্কুলে চাকরির নিয়োগপত্র পেতে কীভাবে দেওয়া হত টাকা? তা নিয়েই ধোঁয়াশা ছিল। এই প্রেক্ষাপটেই আদালতে বিস্ফোরক দাবি করল CBI।  বৃহস্পতিবার CBI-এর আইনজীবী দাবি করেন, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এসএসসি’র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হার।


দুই মিডলম্যান, SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টার কাছে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠাতেন।  তা দেখে নামের সুপারিশ করতেন SP সিন্হা। তারপর অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে নিয়োগকর্তাদের যোগাযোগ করিয়ে দিতেন প্রসন্ন রায় ও প্রদীপ সিং। এরপরই আর্থিক লেনদেন হত নগদে। বিনিময়ে নিয়োগপত্র দেওয়া হত বলে, আদালতে জানান CBI-এর তদন্তকারী অফিসার। সেই টাকা যেত মিডলম্যান প্রসন্ন রায় ও প্রদীপ সিং-এর মাধ্যমেCBI-এর চাঞ্চল্যকর দাবির পর, এদিন বিচারক জানতে চান - কতজন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে?  উত্তরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তকারী অফিসার জানান - অনেককে। পাল্টা বিচারক বলেন, সেটা বুঝতে পেরেছি, কিন্তু ঠিক কতজনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে? উত্তরে CBI-এর তদন্তকারী অফিসার রিপোর্ট দিয়ে জানান, সেখানে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।


যদিও দুই মিডল্যানের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে CBI তরফে বলা হয় - জামিন পেলে তাঁরা তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন, কারণ ওই দু’জনই অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। 

৫ অক্টোবর পর্যন্ত শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও দুই মিডলম্যানকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অর্থাৎ, পুজো জেলেই কাটাতে হবে তাঁদের।