কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টে আজ ফের আর জি কর মামলার শুনানি। আদালতের নির্দেশমতো CBI-এর আজ কেস ডায়েরি পেশ করার কথা। নতুন করে তদন্ত চেয়ে সুুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন অভয়ার মা-বাবা। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে, সর্বোচ্চ আদালতের অনুমতিতে গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে শুনানি প্রথম দিনই আদালতে একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়েছিল CBI।
'অভয়াকে কি গণধর্ষণ করা হয়েছিল? যদি তাই হয়, তাহলে বাকি সন্দেহভাজন কারা?', প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। 'হাসপাতালে জাল ওষুধ, দুর্নীতির প্রতিবাদ করাতেই তাঁর মেয়েকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে খুন করা হয়েছে', ওই দিনই আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন নিহত চিকিৎসকের মা।
এই মুহূর্তে তদন্ত কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে? তথ্যপ্রমাণ লোপাটের তদন্ত কি করেছেন? বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ল CBI. কেস ডায়েরিও জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি।মেয়ের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় নতুন করে তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন বাবা-মা। সেই মামলা কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। শুনানিতে ফের একবার উঠল, তথ্য-প্রমাণ লোপাটের প্রসঙ্গ!
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ CBI-এর আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, ধর্ষণ বা গণধর্ষণ এবং তথ্য প্রমাণ লোপাটের তদন্তও কি করছেন? এই মুহূর্তে তদন্ত কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে? এই নিয়ে কেস ডায়েরি পেশ করার জন্য CBI-এর আইনজীবীকে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি ঘোষ। নিহত চিকিৎসকের মা বলেছিলেন, 'এটা আমরা CBI-কে বারবার বলা সত্ত্বেও, CBI এদিকে আওতায় আনেনি। এবার হয়তো আনবে, CBI হয়তো নড়েচড়ে বসবে।'
কলকাতা হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবারের তরফে, CBI তদন্তে আরও গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এর আগের শুনানিতে আদালতে পরিবারের আইনজীবীর সওয়াল করেছিলেন, সহকারী সুপার, নিরাপত্তারক্ষী এবং নার্সদের এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি CBI. পরিবারের আবেদন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার আধিকারিকদের দিয়ে SIT গঠনের পাশাপাশি, পরবর্তী তদন্ত আদালতের নজরদারিতে হোক। চাওয়া হোক স্টেটাস রিপোর্ট। CBI-এর আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করেছিলেন, ইতিমধ্যেই তদন্তের দায়িত্বে ACP পদমর্যাদার আধিকারিক রয়েছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে তথ্য়প্রমাণ লোপাটের বিষয়টি সামনে আসতে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপি কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, 'CBI’এর আরও বেশি তটস্থ হওয়া উচিত। যেভাবে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করে হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের পুলিশ যারা দেওয়াল ভেঙে দেওয়া, সেই ঘরকে ভ্যান্ডালাইজ করা, বডি ওখানে পড়ে থাকা অবস্থায় হাজার হাজার মানুষ সেখানে গিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে, গরু-ছাগল যে রকম চরে মাঠে, সেই ভাবে চরেছে। স্বাভাবিকভাবে তথ্যপ্রমাণ তো আর বেশিক্ষণ থাকবে না।'
আরও পড়ুন, লন্ডনে গিয়ে SFI-র প্রশ্নের মুখে মুখ্যমন্ত্রী, 'অক্সফোর্ডে মিথ্যাভাষণ দেবেন..' !
প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, 'এই তদন্তে মোড় নেবে বলে আমার স্থির বিশ্বাস। ছাড় পেয়ে য়াবে বলে যারা নিশ্চিন্তে ছিলেন, আগামীদিনে তাদের বিপদের খাঁড়া ঝুলছে বলে, মনে হয়।'আর এবার ফের আর জি কর-মামলার শুনানি।