৩৬ ঘণ্টা টানা ডিউটির পর নিজের কর্মক্ষেত্রে একটু বিশ্রাম করতে গিয়েছিলেন পড়ুয়া চিকিৎসক। হাসপাতাল, তাও আবার সরকারি, চিকিৎসকদের এই কর্মক্ষেত্র বাড়ির মতোই নিরাপদ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানেই ঘটে নৃশংস অপরাধ। নারকীয় অত্যাচারের পর ধর্ষণ করে খুন করা হয় ওই পড়ুয়া চিকিৎসককে। ৫ মাস ১১ দিন পর আর জি কর কাণ্ডের রায়দান করেছে শিয়ালদা আদালত। বিচারক অনির্বাণ দাস আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে। সেই সঙ্গে আবার এও বলেছেন যে আর জি করের এই নারকীয় ঘটনা 'বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়'। বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে, বলছেন আন্দোলনকারীদের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। আগামী দিনে প্রতিবাদ, লড়াই আরও জোরদার হবে, জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসক, সিনিয়র চিকিৎসক এবং গণ সংগঠন মঞ্চের আন্দোলনকারীরা। আর জি করের নৃশংস ঘটনার সঙ্গে সঞ্জয় রায় ছাড়া বাকি যে প্রভাবশালীরা যুক্ত তাদের সকলের কঠিনতম শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন প্রায় সকলেই।
এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ জুনিয়র চিকিৎসক আশফাকুল্লা নাইয়া। আজকের রায় শুনে কী বললেন তিনি?
আশফাকুল্লা নাইয়ার কথায়, বিচারকের সমালোচনা আমরা হয়তো করতে পারি না। কিন্তু যে বিচার হয়েছে তার সমালোচনা করতে পারি। এই বিচার আমরা মানতে পারলাম না। একজনকে লাইফ ইমপ্রিজনমেন্ট দিয়ে, বাকি কতজনকে সারা জীবনের জন্য মুক্ত করা হল? একজনকে জেলের ভিতরে ঢুকিয়ে, বাকি কত তোতাপাখিকে উড়িয়ে দেওয়া হল? আমরা এই প্রশ্নগুলো করতে চাই। একজনকে খাঁচায় আপনি ঢোকাবেন আর বাকিগুলোকে বাইরে ছেড়ে দেবেন? এটা আমরা মানব না। আমরা মনে করি এটা শুধুমাত্র একটা পার্ট হতে পারে, এটা একটা ধড় হতে পারে, আমরা শুধু ধড় নয়, মাথাও চাই, লেজও চাই, পুরো শরীরটা চাই। এই অন্যায় যে বা যারা করেছে, যে বা যারা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, যে বা যারা মদত দিয়েছে, প্রত্যক্ষ ভাবে, পরোক্ষ ভাবে, এখনও পর্যন্ত সাপোর্ট করে যাচ্ছে, ডিরেক্ট ভাবে, ইনডিরেক্ট ভাবে, সবাই সমান অপরাধী, কেউ ছাড়া পাবে না। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও এরকম ঘটনা কেন দেখতে হবে? আর কত অভয়া দেখলে তারপর আমরা অভয়াদের জাস্টিস পাব? এর উত্তর আমরা চাই। ধর্ষণ এবং খুনের পর লাইফ ইমপ্রিজনমেন্ট করে দেওয়া আমাদের কাছে লজ্জার। একজন মানুষ হিসেবে মন থেকে বিচার মানছি না।
আরও পড়ুন- 'এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা না হলে আর কোনটা?' ক্ষুব্ধ জুনিয়র চিকিৎসক থেকে আমজনতা