হাওড়া : আঁচ ছিলই। সেইমতোই সকাল থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি চোখে পড়ছিল। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয় নবান্ন ও তার আশপাশের চত্বর। কিন্তু, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে কার্যত শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এদিন বহু সংখ্যক মানুষ শামিল হন। 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ'-এর আহ্বানে এই আন্দোলন আহ্বান করা হলেও, এদিন সাঁতরাগাছি হোক বা হাওড়া ব্রিজ চত্বর, হাওড়া ময়দান হোক ফোরশোর রোড চত্বর সর্বত্রই মিছিলে চোখে পড়ল বহু সংখ্যক মহিলাদের। যাঁদের অনেকেই হয়তো ছাত্র নয়। মিছিলে যোগ দিয়ে, ছাত্র সমাজের ডাকা আন্দোলনে তাঁদের জমায়েতের কারণও ব্যাখ্যা করলেন কেউ কেউ।


তাঁদের মধ্যে এক মহিলা আন্দোলনকারী স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন, "আমি একজন সাধারণ মহিলা। মেয়ের মা। আজ আপনার মেয়ে-আমার মেয়ে সবার নিরাপত্তার জন্য এসেছি। নেতা-মন্ত্রীদের মেয়েদের বডিগার্ড আছে। আপনার আমার মেয়ের বডিগার্ড নেই। আমাদের মেয়েদের জন্য আমাদেরই লড়তে হবে। আমাদের হাতে লাঠিসোঁটা কিছু নেই। আমরা নিরস্ত্র, আমাদের হাতে কিছু নেই। "


সকাল থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি চোখে পড়ছিল। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয় নবান্ন ও তার আশপাশের চত্বর। কিন্তু, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন প্রান্তে চরম উত্তেজনা ছড়াল। কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি বেধে যায়। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে এই অশান্তির জেরে রক্ত ঝরল একাধিক মহিলার। মাথা ফাটল পুলিশেরও। 


চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা ছড়ায় হাওড়া ব্রিজে। বিশাল গার্ডরেল। ব্যারিকেডের উপর এক যুবক জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে পড়েন। বিক্ষোভকারীদের তখন বলতে শোনা যায়, 'আমাদের এইভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা জাস্টিস চাইছি জাস্টিস, লিগাল জাস্টিস চাইছি।' পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে । এই সময়ই জলকামান থেকে জল ছোড়া শুরু হয়। হাওড়া ব্রিজে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল এসেছিল। জলকামান চলার মধ্যেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি পরপর টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানো হয় একের পর এক। জলের সেই তোড়ের সামনেই জাতীয় পতাকা হাতে লাল পোশাকে দাড়িওয়ালা একজন টানা দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু, জলের তোড় বাড়তে থাকায় দাঁড়িয়ে থাকার উপায় ছিল না। এই পরিস্থিতিতে পিছু হটেন তিনি। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন আন্দোলনকারী। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দেন, "চুড়ি পরে বসে থাকুক এরা। এদের বাড়িতেও মা-বোন আছে। কি না, আমরা মহিলাদের সুরক্ষার জন্য আন্দোলন করতে এসেছি। কারো হাতে তো কোনও অস্ত্র নেই। জাতীয় পতাকা নিয়ে এসেছি আমরা।" 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।