সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: মুমূর্ষু মানুষের জীবন বাঁচানোর ব্রত পালন করতে এসে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। স্বপ্নপূরণের দোরগোড়ায় এসেও সন্তানের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকে বাকরুদ্ধ বাবা-মা।


আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ আন্দোলনে উত্তাল গোটা রাজ্য। নানা মেডিক্যাল কলেজে আন্দোলনে নেমেছেন ডাক্তাররা। যার মর্মান্তিক পরিণতির কারণে এমন হচ্ছে। সেই তিনি ছোট থেকেই ছিলেন অত্য়ন্ত মেধাবী। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে পেয়েছিলেন ৯০ শতাংশ। আর ছিল প্রবল আত্মবিশ্বাস। তাতে ভর করেই জয়েন্টে মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এ উত্তীর্ণ। হাতের সামনে ছিল ২টো রাস্তা। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। তাই বেছে নিয়েছিলেন MBBS-এর পথ। 


স্বপ্ন সফল করার জন্য ছুটছিলেন। সেই ছোটার জন্য়ই কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ থেকে MBBS পাশ করার পরে চিকিৎসা করতে এবং আরও উচ্চশিক্ষার জন্য এসেছিলেন আরজি করে। মেধাবী, শান্ত আর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সেই মেয়েটি আর নেই। ভাবতেই পারছেন না কেউ।


কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হসপিটালের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, 'ও এমবিবিএস এখান থেকেই পাশ করে। পাশ করার পরে আমার ইউনিটেই ছিল। আমার কাছে শব্দ নেই বলার। মেয়েটি এত ভাল, কাজের দিক থেকে হোক, ব্য়বহারের দিক থেকে হোক। সবদিকে খেয়াল রেখে কাজ করত।' 


সালটা ছিল ২০১১। কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম (Kalyani JNM Hospital) হাসপাতালে ভর্তি হন ছাত্রীটি। এখানেই এমবিবিএস। এখানেই ইন্টার্নশিপ। তারপর কিছুদিনের জন্য ডেমোস্ট্রেটর। এই কলেজ, এই ক্যাম্পাস জানে তাঁর প্রথম সব কিছু। বাকিটা জানে আরজি কর। সাধারণ এক পরিবার থেকে উত্তরণ। সেখান থেকেই পাড়ি দিয়েছিলেন অনেকটা পথ। বাকি ছিল সামান্য কিছুটা। কিন্তু একটা রাত, অন্ধকার করে দিয়েছে তাঁর জীবন। থমকে গেছে সব স্বপ্ন, সব ভাবনার ভবিষ্যৎ। উজ্জ্বল হতে পারত যাঁর ভবিষ্যৎ, তিনি আজ ফোটোফ্রেমে বন্দি। মৃত চিকিৎসকের মায়ের হাহাকার, 'অন্য মেয়ের যেন পরিণতি না হয়। মেয়ের মুখে যেন আগুন দিতে না হয়।'


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে কড়া শাস্তি চান সৌরভ, কী বললেন শহরের নিরাপত্তা নিয়ে?