নয়াদিল্লি : দেশে একই লিঙ্গের দুটি মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে কি না, শীর্ষ আদালত (Supreme Court)এই বিষয়ে মঙ্গলবার রায় দিতে পারে। সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি পাবে কি না , তা মঙ্গলবারের রায়ের উপর নির্ভর করে আছে। এ দেশে  সমকামী সম্পর্ক যে অপরাধ নয়, সে বিষয়ে আগেই জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে সমলিঙ্গের বিয়ে (Same sex marriage) এখনও আইনি সিলমোহর পায়নি। এই নিয়ে গত এপ্রিল- মে মাসে টানা বেশ কয়েকদিন শুনানি হয়। এরপর রায় সংরক্ষিত রাখে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। এই ৫ বিচারপতির মধ্যে ছিলেন বিচারপতি হিমা কোহলি, বিচারপতি পি.এস নরসিমহা, বিচারপতি এস.কে কাউল, বিচারপতি এস. আর ভাট। মঙ্গলবার এই বিষয়ে রায় দিতে চলেছে সুপ্রিম কোর্ট । সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের দিকে তাকিয়ে গোটা এলজিবিটিকিউ সমাজ। 


শুনানি চলাকালীন আবেদনকারীরা আইনজীবী মুকুল রোহাতগি, অভিষেক মনু সিংভি, রাজু রামচন্দন, আনন্দ গ্রোভার, গীতা লুথরা প্রমুখদের মাধ্যমে (  Mukul Rohatgi, Abhishek Manu Singhvi, Raju Ramachandran, Anand Grover, Geeta Luthra, KV Viswanathan, Saurabh Kirpal and Menaka Guruswamy ) LGBTQIA+ এর সমতার অধিকারের পক্ষে সওয়াল করেন।  স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় সমলিঙ্গের বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়। এই বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল , কেন্দ্রের মতামত নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।  


 প্রধান বিচারপতি (CJI DY Chandrachud) এই  মামলার শুনানি চলাকালীন প্রশ্ন তুলেছিলেন, বিবাহিত সম্পর্কে বলতে যা বুঝি আমরা, তাতে দুই মানুষকে বিপরীত লিঙ্গেরই হতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা রয়েছে? সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি আরও মন্তব্য করেন, “এই ধরনের সম্পর্ককে (সমকামী) শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্ক হিসেবে দেখি না আমরা। বরং এই ধরনের সম্পর্ক তার চেয়ে বেশিই, স্থিতিশীল, আবেগমিশ্রিত, এবং মানসিক সংযোগও জড়িয়ে রয়েছে।” যদিও সমলিঙ্গের বিয়ের বিষয়টিতে যদিও কেন্দ্র সমর্থন জানায়নি। ভারতীয় সংস্কৃতিতে স্বামী, স্ত্রী, সন্তান এবং বিবাহের যে ধারণা, সমলিঙ্গের বিবাহ তার পরিপন্থী বলে দাবি কেন্দ্রের। কেন্দ্র মনে করে,  সমকামী বিবাহের ধারণা আসলে শহুরে, অভিজাত মানসিকতার ফলশ্রুতি। আদালত নয়, সংসদই এ নিয়ে আলোচনার সর্বোত্তম জায়গা। 


এখন সবপক্ষের মতামত শুনে আদালত কী রায় দেয় সেটাই দেখার। এই রায়ের দিকে তাকিয়ে এলজিবিটিকিউ সমাজের বিরাট অংশ।  সমকামী সম্পর্ক অপরাধের আওতায় না পড়লেও, সমলিঙ্গের বিয়ে আজও নিষিদ্ধ দেশে। এই কাঁটাতার দেশের আইন টপকাতে সাহায্য করে কি না সেটাই দেখার।