কলকাতা : জীবনাবসান  হল সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের অধ্যক্ষা (Sarada Math president) প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণার (Pravrajika Bhaktiprana)। রবিবার  রাত ১১টা ২৪ মিনিটে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সন্ন্যাসিনী। ১০২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা। সকাল ১০টা নাগাদ দেহ নিয়ে যাওয়া হবে সারদা মঠে। 


ইহলোক ত্যাগ


অসুস্থতার কারণে ৭ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রবীণ সন্ন্যাসিনীকে। রাতে তাঁর দেহ আনা হয় টালিগঞ্জে মাতৃ ভবনে। ১১ ডিসেম্বর রাতে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।


ফুসফুসেও সংক্রমণ


হাসপাতালে আইসিইউতে ছিলেন তিনি। জানা যাচ্ছে, ফুসফুসেও সংক্রমণ ছড়িয়ে ছিল। তীব্র জ্বরেও আক্রান্ত ছিলেন। রবিবার দুপুর থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থা অতি সঙ্কটজনক হয়ে যায়।  বিকেলে তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়া হয়।


আরও পড়ুন :


পড়ুন এই মুহূর্তের সেরা বাছাই, চোখ রাখুন নেটদুনিয়ার নজরকাড়া খবরে


সারদা মিশনের চতুর্থ অধ্যক্ষা


প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা মাতাজী ছিলেন শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের চতুর্থ অধ্যক্ষা। ২০০৯-র এপ্রিলে তিনি ওই পদে বৃত হন। তার আগে দীর্ঘ সময় তিনি টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালের সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই ওই হাসপাতাল ১০ শয্যার প্রসূতি সদন থেকে ১০০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত হয়। সেখানে সকলের কাছে তিনি ছিলেন 'বড় মা' নামে পরিচিত।


পূর্বাশ্রম
১৯২০ সালের অক্টোবরে কলকাতাতে জন্ম।   ছোটবেলা থেকেই ঈশ্বরানুরাগ ছিল প্রবল। যোগাযোগ ছিল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সঙ্গেও। সারদেশ্বরী আশ্রম ও হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে তিনি নার্সিং প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৫০ সালে টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজে যোগ দেন। 


মাতৃভবনের দায়িত্বে


অনেকের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন পূর্বাশ্রমের নাম কল্যাণীদি হিসেবে। ১৯৫৯ সালে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী শঙ্করানন্দের কাছে সন্ন্যাস দীক্ষা গ্রহণ করেন। ওই বছরেই সারদা মঠ স্বতন্ত্র সঙ্ঘ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৬০ সালে রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের পরিচালন সমিতির সদস্যও হন প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা। ওই বছরেই তিনি মাতৃভবনের সম্পাদক হন। তখন থেকেই তিনি প্রতিমুহূর্তে চিন্তা করেছেন কী ভাবে মাতৃভবন হাসপাতালের উন্নতি করা যায়। নিজে হাতে করে সাজিয়েছেন ওই হাসপাতালের।


১৯৯৮ সালে শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের সহ অধ্যক্ষা নির্বাচিত হন প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা। ২০০৯ সালে সঙ্ঘের তৃতীয় অধ্যক্ষা প্রব্রাজিকা শ্রদ্ধাপ্রাণার মৃত্যুর পরে ওই পদে বসেন ভক্তিপ্রাণা মাতাজী। টানা ১৩ বছর তিনি অধ্যক্ষা পদের দায়িত্ব সামলেছেন। সারা জীবন সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের ভালর চেষ্টা করেছেন ভক্তিপ্রাণা মাতাজী।