কলকাতা : সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা খেলেন সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় (Sonali Chakravarti Banerjee) ও রাজ্য সরকার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ( Vice-Chancellor of the University of Calcutta ) পদ থেকে অপসারণেই মান্যতা দিল শীর্ষ আদালত ( Supreme Court )। এর আগে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের নেওয়া সিদ্ধান্ত খারিজ করার নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না রাজ্য- পর্যবেক্ষণ ছিল আদালতের।
'পুনর্নিয়োগের এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই'
আগেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে পুনর্নিয়োগের এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই। সেই সঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে পুনর্বহালের বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। সেপ্টেম্বরে সেই বিজ্ঞপ্তিই খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলার প্রেক্ষাপট কী
এই মামলার নেপথ্যে রয়েছে সেই রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত। গত বছর শুধু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। তৎকালীন রাজ্যপাল ও আচার্য জগদীপ ধনকড় সেই নিয়োগে অনুমোদন দেননি। রাজভবনের সিলমোহর ছাড়াই বেআইনি ভাবে ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের অভিযোগ তুলে সরব হন ধনকড়। কোন ওরকম বাছাই ছাড়াই সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুনর্নিয়োগকে স্বজনপোষণের অনন্য নজির বলে উল্লেখ করেন তিনি। সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুনর্নিয়োগকে বেআইনি দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়, আচার্যকে এড়িয়ে উপাচার্য নিয়োগ অসাংবিধানিক। সরকার সাংবিধানিক বিধি ভাঙলে সঙ্কট তৈরি হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়
দীর্ঘ শুনানির পর কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুনর্নিয়োগ খারিজ করে দেয়। তখন রাজ্যের বক্তব্য ছিল, রাজ্য এবং রাজ্যপাল দ্বন্দ্বে এক সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই উপাচার্য পদে কাউকে নিয়োগের জন্য রাজ্যপাল সম্মতি দিচ্ছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে, রাজ্যপালের সম্মতি ছাড়াই রাজ্য উপাচার্য নিয়োগ করে। রাজ্যের আরও দাবি, সার্চ কমিটিই সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঠিক করেছিল।
কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। সেই মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট।