কলকাতা: একদিকে বকেয়া ডিএ (DA) নিয়ে আজ সব সরকারি অফিসে ধর্মঘটের ডাক, তখনই শিক্ষায় দুর্নীতি (Recruitment Scam), রাজ্যের একাধিক স্কুল বন্ধ এবং ছাত্র সংসদ ভোট ও আনিসকাণ্ডে দোষীদের শাস্তির মতো একগুচ্ছ অভিযোগে পথে নামছে এসএফআই। পুলিশের অনুমতি না মিললেও, আজ বিধানসভা অভিযান এসএফআই-এর। পরীক্ষা থাকায় লালবাজার মিছিলের অনুমতি দেয়নি। কিন্তু, সিপিএমের ছাত্র সংগঠন অবস্থানে অনড়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিয়ালদা স্টেশন চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
ধর্মঘট ও আন্দোলনের প্রত্য়ক্ষ প্রভাব দেখা গিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যোগমায়া দেবী কলেজে। ক্লাস বয়কটের ডাক দিয়েছেন পড়ুয়ারা। সকাল থেকে কলেজে চলছে পিকেটিং। অন্য়দিকে, DA-এর দাবিতে ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছেন অধ্য়াপকরা। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে অধ্য়াপকেরা গেলেও ক্লাস নিচ্ছেন না তাঁরা।
রাজ্য সরকার ৩ শতাংশ DA বৃদ্ধির পরও, আন্দোলন-অনশনে অনড় ছিলেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধিরা। বকেয়া DA মেটানোর দাবিতে আজ সব সরকারি অফিসে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বামপন্থী সংগঠন কোঅর্ডিনেশন কমিটি। সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেসও। আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে বিজেপি। আর এদিনই শিক্ষায় দুর্নীতি, রাজ্যের একাধিক স্কুল বন্ধের এবং ছাত্র সংসদ ভোট ও আনিসকাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন SFI।
নবান্নর সার্কুলার
বকেয়া DA-র দাবিতে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে আরও কড়া তৃণমূল সরকার। একবার নয়, শুক্রবার সরকারি কর্মীদের হাজিরা ৪ বার খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিল নবান্ন। আজ সকালে সমস্ত জেলার DM ও সব দফতরের বিভাগীয় প্রধানদের উদ্দেশে জারি হওয়া সার্কুলারে বলা হয়েছে, সকাল পৌনে ১১টা, বেলা ১২টা, দুপুর দেড়টা ও বিকেল ৫টা, এই ৪ সময়ে, ৪ বার সরকারি কর্মীদের হাজিরার তথ্য় নিয়ে তা জানাতে হবে। যে কর্মীরা কাজে যোগ দেননি, তাঁদের অনুপস্থিতির কারণ ঠিক কী, তাও সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত মুখ্য় সচিবকে চিঠি আন্দোলনকারীদের
সরকারি অফিসে ধর্মঘট রুখতে কড়া বিবৃতি জারি করেছে নবান্ন। অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শুক্রবার কোনওভাবেই পূর্ণ বা অর্ধ দিবস ছুটি নেওয়া যাবে না। ধর্মঘটে সামিল হলে কর্মজীবন থেকে বাদ যাবে একদিন। সেইসঙ্গে শোকজ করা হবে। এই নির্দেশের পাল্টা, ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় থাকার দাবি জানিয়ে, অতিরিক্ত মুখ্য় সচিবকে চিঠি দিলেন পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত কর্মচারী সমিতির যৌথ কমিটির সদস্য়রা
ধর্মতলা
বকেয়া DA-র দাবিতে ক্রমশ আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। শুক্রবার শহিদ মিনারে ৪৩তম দিনে পড়ল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলন। পাশাপাশি ২৯ দিন ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছে আন্দোলনকারীদের একাংশ।
দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা
বকেয়া ডিএ-র দাবিতে সিটু-র রাজ্য় সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাল সিটুর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা। আজ কাজে যোগ দেওয়ার আগে, কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান সিটুর সমর্থকরা।
বাঁকুড়া
বাঁকুড়া জেলাশাসকের দফতরের মূল গেট ঘেরাও করে ধর্মঘটীদের বিক্ষোভ। অফিসে যাঁরা কাজে যোগ দিতে আসছেন, তাঁদের ধর্মঘটে সামিল হওয়ার আবেদন আন্দোলনকারীদের।সকুল পরিদর্শকের অফিসে পুলিশ ও আন্দোলনকারী ধস্তাধস্তি। কর্মচারীদের ঢুকতে বাধা দেয় ধর্মঘটীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। এরপরেই পুলিশের সাথে ধর্মঘটীদের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। বেশ কয়েকজন কে আটক করে পুলিশ।
শিলিগুড়ি
ধর্মঘট সফল করতে শিলিগুড়ি কলেজের মেন গেট বন্ধ করে রাখেন কর্মীরা। চলে স্লোগান।
চুঁচুড়া
DA-র দাবিতে চুঁচুড়া শিক্ষা ভবনের গেট আটকে বিজেপির বিক্ষোভ। গেটে পতাকা ঝুলিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।
বোলপুর - ভাস্কর
DA-র দাবিতে ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে বোলপুরে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করলেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
জলপাইগুড়ি - রাজা
ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন সরকারি দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন সরকারি কর্মীরা।
আলিপুরদুয়ার - অরিন্দম
DA-র দাবিতে আলিপুরদুয়ার মহকুমা আদালতের সামনে কর্মচারী সমিতির পিকেটিং। বন্ধ করে দেওয়া হয় আদালতে ঢোকার মেন গেট। অন্য়দিকে, প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্স কন্যায় দেখা গেল কর্মীদের সংখ্য়া চোখে পড়ার মতো কম।
ঝাড়গ্রাম - অমিতাভ রথ
ঝাড়গ্রামে, জেলাশাসকের অফিসের বাইরে থেকে ধর্মঘটীদের তুলে নিয়ে গেল পুলিশ। এদিন, DA-র দাবিতে জেলাশাসকের দফতরের গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন সরকারি কর্মীদের একাংশ। সেই সময় ৯ জনকে আটক করে পুলিশ।