বাচ্চু দাস, দার্জিলিং: পুলিশের পোশাক পরে পুলিশ (Police) পরিচয় দিয়ে তোলাবাজির (Extortion)  অভিযোগ। শিলিগুড়ির (Siliguri) বিধান মার্কেট (Bidhan Market) এলাকা থেকে এক যুবককে ধরল পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশ। জানা গিয়েছে, পুলিশের পরিচয় দিয়ে দুই যুবক এক ব্যক্তিকে ধরেন এবং সেই ব্যক্তিকে তারা বলে যে, তার ব্যাগে মাদক (Drug Traffing) রয়েছে। এরপর তারা ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়।কিন্তু টাকা নিয়ে পালানোর সময় তাদের মধ্যে এক যুবক ধরা পড়ে যায়। সেই যুবককে আটক করে রেখে পুলিশে খবর দেয় ব্যবসায়ীরা (Businessman)। পরে পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশ এসে ওই যুবককে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ এবং অপর যুবকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।


বিধানমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা জানান, এই যুবক এর আগেও এমন ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। মাঝেমধ্যেই বিধান মার্কেটে এরা পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঘোরাঘুরি করে লোকজনকে ভয় দেখাতো। ধৃত যুবকের বিরুদ্ধে এর আগেও একই অভিযোগ ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।প্রসঙ্গত,  গত বছর জুলাই মাসে পুলিশ পরিচয়ে বাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। শিলিগুড়ির বাঘাযতীন কলোনি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সেবার ২১ জনকে। এদের মধ্যে ৩ জন ছিল প্রতারণা চক্রের পাণ্ডা। বাকি ১৮ জন প্রতারণা চক্রের শিকার। পুলিশ সূত্রে জানা যায়,  বাঘাযতীন কলোনির মাঠে পুলিশের পোশাক পরে প্রশিক্ষণ চলছিল। দেখে সন্দেহ হয় এক পুলিশ কর্মীর। প্রধাননগর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে সন্দেহভাজনদের আটক করে। ৬ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর বয়ানে অসঙ্গতি মেলায়, তারপরেই ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় পুলিশের পোশাক, টুপি ও বেল্ট-সহ নগদ টাকা।


অপরদিকে, গতবছর জুলাই মাসে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বৃদ্ধকে 'ব্ল্যাকমেল' (blackmail) এর অভিযোগ ওঠে। শ্লীলতাহানির (molestation) কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় গ্রেফতার হন এক মহিলা-সহ তিন জন (arrest)। ঘটনাটি ঘটেছিল চন্দননগরের (chandannagar) কলুপুকুর পঞ্চাননতলা এলাকায়। চন্দননগরের কলুপুকুর পঞ্চাননতলার বাসিন্দা রমেশ চট্টোপাধ্যায় একটি আবাসনে একাই থাকেন। সত্তরোর্ধ্ব রমেশের ছেলে চাকরি সূত্রে সপরিবার লন্ডন-নিবাসী। একা বৃদ্ধের সঙ্গে রুনু দাশগুপ্ত নামে পাড়ারই এক প্রৌঢ়ের সখ্য তৈরি হয়েছিল। রমেশের তুলনায় রুনু শক্ত সমর্থ হওয়ায় তাঁর বাজারের ব্যাগ মাঝেমধ্যেই ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিতেন রুনু।  সেই সূত্রে রুনুর পালিতা মেয়ে মধুমিতা পালও রমেশের ফ্ল্যাটে আসেন কয়েকবার। ছবিও তোলেন। এত দূর পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছিল।


আরও পড়ুন, জানুয়ারির শেষে জ্বালানির দর কী ? পেট্রোল-ডিজেলের দামে হেরফের হল কি কলকাতায় ?



বৃদ্ধের অভিযোগ, হঠাতই তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। সেখানে বলা হয়, রমেশের বিরুদ্ধে তাঁর বন্ধুর মেয়েকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় অভিযোগ হয়েছে। তিনি যদি পুলিশি পদক্ষেপ এড়াতে চান তা হলে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, লন্ডনে তাঁর ছেলেকেও সবটা জানানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। রমেশের দাবি, ভয় পেয়ে তিনি টাকা দিতে রাজি হয়ে যান। কয়েক ধাপে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দিয়েও দেন। এর পরই নতুন মোড়। 
 ঘটনার কথা জানালে অভিযুক্তদের ধরতে ফাঁদ পাতে পুলিশ ।  সাদা পোশাকে দুজন পুলিশকর্মী অপেক্ষা করছিলেন। যিনি টাকা নিতে এসেছিলেন, তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। তার পর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে পড়ে পুরো চক্রান্ত।