কলকাতা: নির্দেশের পরেও, সিঙ্গুর-মামলায় ক্ষতিপূরণের দায়টা কার ? কার জন্য হয়েছে প্রকৃতই ক্ষতি ? বিরোধীদের কাছে এই প্রশ্নগুলির কাঠগড়ায় শাসকদলের দোসর এবার বামেরাও। কখনও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhkari) গর্জে উঠেছেন। কখনও আবার দিলীপ ঘোষ। তৃণমূলকে তো বটেই, সিপিএমকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। মূলত সিঙ্গুরে (Singur) টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো কারখানা না হওয়ায়, রাজ্য় সরকারকে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আর লোকসভা ভোটের আগে যাবতীয় দুর্নীতির পাহাড়ের মাঝে কার্যতই সিঙ্গুর-মামলা, আগ্নেয়গিরির রূপ নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। আর এহেন পরিস্থিতিতে ধীরেসুস্থে বামদেরকেই কাঠগড়ায় তুললেন কুণাল ঘোষ। যদিও তার জন্য কারণও দর্শালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (Kunal Ghosh)। 


 এদিন কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ বেআইনি ছিল। ক্ষতিপূরণ দিতে হলে সিপিএম দিক।' প্রসঙ্গত, গতকাল দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'এরা রাজনৈতিক স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে সামাজিক বা দেশের কোন লাভ হয়নি। এত বড় শিল্পপতি কে ওখান থেকে সরানো। তিন ফসলি জমি দেওয়াটাও ঠিক হয়নি আবার সেই জমিকে বন্ধ করে দিয়ে বেকার করে দেওয়ার কোনও মানে হয় না। সিপিএমও করেছে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে টিএমসিও করেছে তাই। তার ফল ভক্তি হয়েছে সাধারণ মানুষকে। চাকরিও গেল ব্যবসা গেল জমিও গেল। এখন টাকাও যাবে... । এর দায়টা কে নেবে?? এর দায় নিতে হবে, ক্ষমা চাইতে হবে মানুষের কাছে।'


 টাটা মোটরস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ন্যানো কারখানা না হওয়ায় টাটাকে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসি-কে। ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। ২০১৬-র ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো ক্ষতিপূরণ পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত সুদ দিতে হবে। ট্রাইবুনালের রায় অনুযায়ী, রাজ্য সরকার যতদিন না ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে ততদিন সুদ দিতে হবে। ৭ বছরে ১১% সুদ ধরলে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে', মামলার খরচের জন্য ডব্লুবিআইডিসি-কে'দিতে হবে আরও ১ কোটি টাকা,বিবৃতি টাটা মোটরসের।


আরও পড়ুন, জ্যোতিপ্রিয়কে PA-র মুখোমুখি বসিয়ে জেরার সম্ভাবনা


প্রসঙ্গত, একটু যদি ফিরে তাঁকানো যায়, বছর পনেরো আগে রতন টাটা বলেছিলেন, 'মমতার জন্য সিঙ্গুর ছাড়লাম।' রাজ্যের অন্যতম এই বড় বিষয়টি (Tata Motor Case) নিয়ে বহু জল ঘোলার পর, বাইশ সালে শিলিগুড়িতে দলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে মমতা (Mamata Banerjee) এই অভিযোগ উৎখাত করে বলেছিলেন, 'তিনি নন, টাটাকে তাঁড়িয়েছে সিপিএমই।' যদিও বছর পেরোলেই, বিষয়টি এতটুকুও ফিকে হয়নি। মূলত বাংলায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল বহু যোগ্য বেকারদের কর্মসংস্থান। যা আরও বিতর্ককে উসকে দেয়।