গৌতম মণ্ডল, নামখানা : লটারি লাগা বৈকি ! তাও আবার বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আগে। জালে উঠল প্রায় ১৭ কেজি ওজনের তেলিয়া ভোলা মাছ (Telia Bhola Fish)। আর তার জেরে খুশির হাওয়া নামখানার (Namkhana) চন্দনপিড়িঁর বাসিন্দা গোবর্ধন সামন্তর পরিবারে।
পেশায় প্রান্তিক মৎস্যজীবী গোবর্ধন। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সকালেও হরিপুর ফেরিঘাট থেকে বঙ্গোপসাগরে ভুটভুটি নিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। জাল ফেলেন বকখালির অদূরে কালিস্তানের কাছে। তাতেই চমক ! সন্ধ্যা নাগাদ জাল তুলতেই দেখা যায়, বিশালাকার তেলিয়া ভোলা মাছ ধরা পড়েছে। এই মাছ যে কতটা মূল্যবান তা সুন্দরবনের সব মৎস্যজীবীই বিলক্ষণ জানেন।
মাছটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয় ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার মৎস্য আড়তে। গতকাল সন্ধেয় মাছটি নিলামে ওঠে। দাম ওঠে কেজি প্রতি ৯ হাজার ২০০ টাকা। শেষমেশ মাছটির দাম দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা। ওজন ছিল প্রায় ১৭ কেজি।তেলিয়া ভোলা মাছের পটকা দিয়ে ক্যাপসুলের খোল তৈরি হয়। যার ফলে মূল্যবান এই মাছ।
চলতি বছরে দিঘা মোহনায় একাধিকবার এই মাছ পাওয়া গেলেও, বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) খুবই কম মেলে। এই পরিস্থিতিতে পুজোর আগে এই মাছে মেলায় রীতিমতো খুশির হাওয়া সামন্ত পরিবারে।
গত অগাস্ট মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা দরের তেলিয়া ভোলা মাছ ওঠে দিঘায়। একটা-দু'টো নয়, একসঙ্গে ৯টি মাছ। প্রায় ৩১ হাজার টাকা কেজি দরে চলে বিক্রিবাঁটোয়ারা। এক একটি মাছের ওজন ছিল প্রায় ২৫-৩০ কেজি। ওড়িশার ধামরা থেকে এক মৎস্য ব্যবসায়ী দিঘা মোহনায় মাছগুলি নিয়ে আসেন। মাছগুলি পৌঁছানোর পর রীতিমতো হিড়িক পড়ে যায় দিঘা মোহনায়।
গভীর সমুদ্রে পাওয়া যায় এই মাছ। মাছের পটকা ও অন্যান্য অঙ্গ জীবনদায়ী ওষুধ তৈরির কাজে লাগে। এছাড়া মাছগুলি বিদেশেও রফতানি করা হয়। দিঘার জি-কে ডি আড়তে এই মাছের নিলাম চলে। মন্দার বাজারে এই ধরনের মাছ পেয়ে বেজায় খুশি হন মৎস্যজীবীরা। তেলিয়া ভোলাগুলি দেখতে যেমন ভিড় জমান মৎস্যজীবীরা, তেমনি ভিড় জমান দিঘার পর্যটকরাও। ইতিপূর্বে দিঘায় তেলিয়া ভোলার দেখা মিললেও, এত পরিমাণ দর-ওজন এর আগে দেখা যায়নি।
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসেও উঠেছিল তেলিয়া ভোলা মাছ। বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের জালে উঠে আসে শতাধিক তেলিয়া ভোলা মাছ। ডায়মন্ড হারবার নগেন্দ্র বাজার আড়তে ১১৪টি তেলিয়া ভোলা মাছ বিক্রি হয় ৫০ লক্ষের বেশি টাকায়। একসঙ্গে এত সংখ্যক মাছ পেয়ে খুশি হয়ে পড়েন ক্রেতা থেকে বিক্রেতারা।