রঞ্জিত হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পেটের জ্বালায় প্রাণ হাতে করে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে যাওয়া। কাদা মাটিতে বাঘের পায়ের থাবা, বৃষ্ঠার গন্ধ, প্রকৃতি বা অন্যান্য প্রাণীদের চাহনি-এসব কিছু থেকেই বরাবর বাঘ আসছে কিনা, ধরে ফেলেন অভিজ্ঞ মৎসজীবীরা। তবে বহু বছরের অভিজ্ঞতাও হয়তো অনেকসময় হার মানে। বাড়ি ফেরা হয় না আর। এমন বহুবার ঘটেছে, বন্ধুকে নিয়ে ফিরতে পারেনি বাকিরা। কিংবা ফিরেছে বন্ধুর নিথর দেহ-র সঙ্গে বাড়ির এলাকায়। বারবারই সেখবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। কিন্তু এবার সেই চলে আসা ঘটনায় যবনিকা। বাঘের হামলা সত্বেও তিনি ফিরে এলেন। গুরুতর জখম হয়েও চিকিৎসকদের লাগাতার চেষ্টায় দিলেন সাড়া। বলা যায় নতুন জীবন ফিরে পেলেন সুন্দরবনের এক বাসিন্দা ৷
দীর্ঘ চিকিৎসার পর খানিকটা সুস্থ হয়ে আজ বাড়ি ফিরছেন তিনি ৷ খুশি পরিবার ও প্রতিবেশিরা ৷ সুন্দরবনের ছোট মোল্লাখালি অঞ্চলের বাসিন্দা জগদীশ মন্ডল ৷ আগে কেরালায় শ্রমিকের কাজ করতেন ৷ সম্প্রতি বাড়ি ফিরে এসে এলাকার আরও কিছু মৎস্যজীবীদের সাথে মাছ ও কাঁকড়া ধরার কাজ শুরু করেছিলেন সংসার চালানোর জন্য ৷ জানা গিয়েছে, ১২ ফেব্রুয়ারি জগদীশ মন্ডল ও এলাকার আরও দুজন গিয়েছিলেন কাঁকড়া ধরতে ৷ ছোট মোল্লাখালি থেকে চামটার জঙ্গলে গিয়েছিলেন কাঁকড়া ধরতে ৷ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আচমকাই পট বদল।
সমস্ত শক্তি নিয়ে আক্রমণ করল বাঘ৷ কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতেইষ বন্ধুরা বুঝতে পারলেন, যে প্রকৃতই কী হয়েছে ? শেষঅবধি সঙ্গীদের চেষ্টায় বাঘের মুখ থেকে জীবন ফিরে পান তিনি ৷ঘাড়ে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি৷ কোনওরকমে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে নিয়ে আসা হয় সোনারপুরের কালিকাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ৷ দীর্ঘ চিকিৎসার পর অবশেষে অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন তিনি ৷ চিকিৎসকরা জানান, খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন জগদীশ ৷
আরও পড়ুন, মীনাক্ষীর নেতৃত্বে বসিরহাটে SP অফিস অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার, অবরুদ্ধ বসিরহাট-তেঁতুলিয়া রোড
তবে অতীতের একাধিক ঘটনা শোকের ছায়া এনে দিয়েছে বারবার বাংলায়। কুলতলিতে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছিল মৎস্যজীবীর। স্থানীয় সূত্রে খবর, নৌকা নিয়ে কুলতলির কাঁটামারি থেকে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন ৩ জন। সুন্দরবনের নয়াবাঁকি জঙ্গলে কাঁকড়া ধরার সময় প্রদীপ সর্দার নামে এক মৎস্যজীবীর ওপর আক্রমণ করে বাঘ। টেনে নিয়ে যায় জঙ্গলে। অন্যান্য় মৎস্যজীবীরা তাঁর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।