সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছেন স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি ( SSC Scam ) মামলায় ধৃত দুই হেভিওয়েট কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ( Kalyanmoy Ganguly ) ও সুবীরেশ ভট্টাচার্য ( Subiresh Bhattacharya ) । বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে চলছে মামলা। বুধবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সামনে আনেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেন খুঁজে বার করতে সিবিআইকে পরামর্শ দেন বিচারপতি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁর মন্তব্য অযোগ্যদের চাকরি নিশ্চয়ই ভালোবাসার বশবর্তী হয়ে দেওয়া হয়নি ! তারপর সিবিআইকে তিনি প্রশ্ন করেন, 'কতদিন জেলবন্দি করে রাখতে পারবেন? গোটা বিচারপ্রক্রিয়া ঠিক সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারবেন?' সিবিআইকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি।
ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে CBI। ঠিক তার ৪ দিনের মাথায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হন SSC’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। দুজনেই এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। বিচারপতি এদিন বলেন, দুর্নীতিতে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকা জানতে চাই। তিনি আরও প্রশ্ন রাখেন, 'কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছে? কতজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে? চাকরি নিশ্চয়ই ভালোবাসার কারণে দেওয়া হয়নি', মন্তব্য বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির।
আরও পড়ুন :
'জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ার বদলা বন্দে ভারতে নেওয়া হচ্ছে না তো?' প্রশ্ন তুললেন দিলীপ
এদিন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী তাঁর মক্কেলকে জামিন দেওয়ার আর্জি জানান। তিনি আরও বলেন, '১১৩ দিন জেলে আছেন কল্যাণময়, চার্জশিট দাখিল হয়ে গেছে। '
সওয়াল জবাবে সিবিআই এর আইনজীবী বলেন, অনুসন্ধানের সময় বেনিয়ম পাওয়া গিয়েছে বলে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। 'শান্তিপ্রসাদ সিনহার সঙ্গে চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। শান্তিপ্রসাদ সিনহার কাছ থেকে সুপারিশ পত্র নিয়ে নিজেই সরাসরি নিয়োগপত্র দিতেন কল্যাণময়। প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে নিয়োগপত্র দেওয়া হত', দাবি সিবিআই-এর ।
জামিনের আবেদন মামলায়, উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, সিবিআই যেহেতু আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখছে, তাই কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে দুটি বিকল্প দেওয়া হল। হয় তিনি মামলা প্রত্যাহার করুন, না হলে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করা হবে। তিনি কী করতে চান, সেটা বৃহস্পতিবারের মধ্যে আদালতে জানাতে হবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।