কলকাতা: পেশায় স্কুল শিক্ষিকা হলেও, সরাসরি ব্য়বসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, অনুব্রত-কন্য়া সুকন্য়া। নির্দেশনামায় লিখিতভাবে এমনই দাবি করল ইডি। শুধু তাই নয়, ED-র তরফে দাবি, তদন্ত করতে গিয়ে এক আজব বিষয় তাদের নজরে এসেছে। সুকন্য়ার (Sukanya Mondal) নামে বিভিন্ন অ্য়াকাউন্টে যে লাখ লাখ টাকা জমা পড়েছে, সেখানে বেশিরভাগ ট্রানস্য়াকশনই একটু অদ্ভুত ধরণের।


কৌশলে টাকা জমা: বৃহস্পতিবার অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের ৩ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্ট। এদিন আদালতে তোলার সময় সংবাদমাধ্য়মের প্রশ্নের মুখে নীরব ছিলেন অনুব্রত কন্যা। সূত্রের খবর, তাঁর অ্য়াকাউন্টে জমা পড়েছে ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকা। অর্থাৎ ৫০ হাজারের থেকে ১০ টাকা কম। ED সূত্রে দাবি, এব্য়াপারে সুকন্য়াকে প্রশ্ন করা হলেও সদুত্তর মেলেনি। সুকন্য়ার দাবি, যাঁরা রেখেছেন, তাঁরাই বলতে পারবেন। ED সূত্রে দাবি, বিভিন্ন সময় বাড়ির পরিচারক, রাঁধুনি অথবা গাড়ি চালক ব্য়াঙ্কে গিয়ে এই টাকাগুলি ডিপোজিট করে আসতেন। তাঁরা জানিয়েছেন, যেমনটা তাঁদের রাখতে বলা হত, তাঁরা তেমনটাই করতেন।


ED সূত্রে দাবি, এ ব্য়াপারে ব্য়াঙ্ক কর্মীরা জানিয়েছেন, অনুব্রতর এতটাই প্রভাব যে, কিছু জিজ্ঞাসা করার সাহস পেতেন না ব্য়াঙ্ক কর্মীরাও। তবে কি প্য়ান কার্ড যাতে না দেখাতে হয়, সে সবের জন্য়ই এই কৌশল? নিয়ম মতো, ৫০ হাজারের বেশি নগদ জমা দিতে গেলেই দিতে হয় প্য়ানের তথ্য়। তাই কি ৫০ হাজারের থেকে ১০ টাকা কম দিয়ে সুকৌশলে নিয়ম এড়ানোর চেষ্টা করা হত? কিন্তু, প্রায় ১ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে এই ট্রেন্ড। অর্থাৎ, ১০ টাকা কম। জমা দেওয়া হয়েছে ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। তবে, কি ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকা বারবার জমা পড়ায়, যাতে সন্দেহ না হয়, তাই মাঝে মাঝে ১ লাখের ক্ষেত্রেও এরকম অসমপূর্ণভাবে টাকা জমা দেওয়া হত? এই লেনদেনের নেপথ্য়ে ঠিক কী কারণ? উত্তর খুঁজছেন ED-র আধিকারিকরা।


ইডির দাবি, সুকন্যার অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কিন্তু, তাঁকে যখনই এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে তখনই সুকন্যা বলেছেন, সব বাবা আর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি জানেন। অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হন গতবছর ১১ অগাস্ট। এরপর সুকন্যা বারবার দাবি করে এসেছেন কোটি কোটি টাকার লেনদেন ও সম্পত্তির বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। কিন্তু, সূত্রের দাবি, মোড় ঘোরায় অনুব্রতর রাঁধুনি, পরিচারক ও গাড়ি চালকদের বয়ান। ইডির দাবি, ব্যাঙ্ক নগদ জমার প্রায় ২০০টি রসিদ মেলে। নগদে জমা করা টাকার অঙ্ক ছিল ১০ কোটিরও বেশি। অনুব্রতর রাঁধুনি, পরিচারক ও গাড়ি চালকরা গিয়ে সেই টাকা জমা করতেন , কে টাকা পাঠাত জানতে চাইলে, তাঁরা সুকন্যার নাম করেন। তখন থেকেই সরাসরি ইডির স্ক্যানারে চলে চলে আসেন অনুব্রত কন্যা। ইডি সূত্রে দাবি, তথ্যপ্রমাণ সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও বারবার জবাব এড়িয়ে যান তিনি। বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও সেই একই উত্তর দেওয়ায়, তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।


আরও পড়ুন: Side Effects Of Oranges : গুণের 'খনি', কিন্তু কখন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কমলা লেবু ?