কলকাতা : গতকালের পর আজও সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল আর জি কর মামলার শুনানি। বৃহস্পতিবার এই মামলা শুনবেন বলে জানালেন প্রধান বিচারপতি। এদিকে পরপর দু'দিন শুনানি না হওয়ায় হতাশ নিহত তরুণী চিকিৎসকের পরিবার। শুনানি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররাও।
মঙ্গলবারের পর বুধবার। পরপর দু'দিন পিছোল আর জি কর মামলার শুনানি। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পর ৮৯ দিন কেটে গেছে। সুবিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা নাগরিক আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে বাংলা তথা গোটা দেশ। রাজ্যের সংস্থা থেকে তদন্তভার গেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার কাঁধে। হাইকোর্ট থেকে মামলা সরেছে সর্বোচ্চ আদালতে। কিন্তু বিচার এখনও মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মামলার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার পর, সকলেই মুখিয়ে ছিলেন বুধবারের শুনানির দিকে। ৩৪ নম্বরে এই মামলা থাকলেও, মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছিলেন এদিন টপ অফ দ্য বোর্ড অর্থাৎ একেবারে শুরুতেই এই মামলা শুনবেন। কিন্তু এদিন সকালে জানা যায়, দুপুর তিনটে নাগাদ এই মামলার শুনানি হবে। কিন্তু অন্যান্য মামলার শুনানির জেরে দেরি হয়ে যায় এদিনও। বিকেল চারটের একটু আগে দেখা যায় ১৩ নম্বর মামলার শুনানি চলছে। সেইসময় প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, বৃহস্পতিবার এই মামলা (আর জি কর ধর্ষণ-খুন) তিনি শুনবেন।
এনিয়ে নিহত নির্যাতিতার বাবা বলেন, "সত্যি কথা বলতে মন থেকে খুবই কষ্ট হচ্ছে যে বিচারব্যবস্থার ওপর আমরা পুরোপুরি ভরসা রাখি। কাল বিচারপতি নিজে বললেন যে সকালবেলা প্রথম কেস থাকবে আরজি কর। কিন্তু, দেখা গেল ৩৪ নম্বরে কেসটা চলে গেল। কী করে ? তাহলে প্রধান বিচারপতি কেন বললেন, সকালবেলা এটা প্রথম কেস থাকবে ? তাহলে বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থাটা স্বাভাবিকভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে। বিচার ব্যবস্থার উপর একটু হতাশ হচ্ছি। সুপ্রিম কোর্ট আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের স্বতঃপ্রণোদিত মামলা নিয়েছিল। সেটা কী হল ? আরজি মামলা চলে গেল। এটা কী ধরনের কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছে ? আজ তিন মাস হয়ে গেল আমরা সঠিক বিচার পাইনি এখনও। সিবিআই বলছে, আমাদের এখনও অনেক কাজ বাকি। সুয়ো মোটো উনি যেটা মনিটরিং করছেন, কী মনিটরিং করছেন ?"
অন্যদিকে নিহত নির্যাতিতার মায়ের বক্তব্য, "আমার মেয়েটার মৃত্যুটাকে একটা ছেলেখেলা দেখা হয়েছে। যেখানে আমরা এত বছর ধরে যা করেছিলাম, সব হারিয়েছি। মেয়েটা এতদিন কষ্ট করে যা অর্জন করেছিল সব চলে গিয়েছে। সেখানে এরা একটা ছেলেখেলা মনে করছে। আমরা প্রচণ্ড আশাহত হয়েছি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির উপরে। তাঁর যদি শোনার সময় না থাকে উনি নিতে গেলেন কেন ?"