অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: ধর্মতলায় (Dharmatala) মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে ফের ধর্নায় বসলেন চাকরিপ্রার্থীরা (Job Seeker)। এর আগে ২৫ মার্চ, পুলিশের তরফে মৌখিকভাবে তাঁদের ধর্না তুলে নিতে বলা হয়। এই নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। এর পর রাষ্ট্রপতির সফরের কথা বলে পুলিশ চাকরিপ্রার্থীদের অনুরোধ করে। তাতে সাড়া দিয়ে ২৭ ও ২৮ তারিখ তাঁরা ধর্নায় বসেননি। আজ থেকে ফের মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে ধর্নায় বসেছেন প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী ধর্নায় বসতে পারলে, তাঁরা কেন ধর্নায় বসতে পারবেন না? এই প্রশ্নও তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।


মাথার ওপর কাঠফাটা রোদ্দুর, হাতে স্টিলের থালায় শুধু ভাত। পাতের পাশে সামান্য় নুন। চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে, ভাতের থালা হাতে অভিষেকের সভামঞ্চের দিকে হাঁটছেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু মাঝপথেই পুলিশের বাধা। আন্দোলনকারীদের আটক করল পুলিশ। এরা সকলেই চুক্তিভিত্তিক কর্মী।  তাঁদের দাবি, ন্য়াশনাল স্কিলস কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক, সংক্ষেপে, NSQF-এর অধীনে, বেসরকারি সংস্থার মাধ্য়মে বিভিন্ন সরকারি স্কুলে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী পদে তাঁদের নিয়োগ করা হয়। হাতে NSQF-এর প্ল্য়াকার্ড কিন্তু হঠাৎ করেই, কোনও নোটিস ছাড়া, তাঁদের ছাটাই করা হয় বলে অভিযোগ। 


আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁদের এজেন্সি দিয়ে নিয়োগ করেছে। ১৬ সাল থেকে সরকারি স্কুলে চাকরি করি। তাঁদের শিক্ষাকর্মীদের নোটিস না দিয়ে চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। বকেয়া বেতন সমেত চাকরি পুনর্বহাল করতে হবে। তারই প্রতিবাদে, চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে, এদিন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সভাস্থল থেকে ১০০ মিটারের মধ্য়ে আন্দোলনে বসেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁরা এক ফোনে অভিষেক-এ ফোন করে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। কিন্তু কোনও লাঊ হয়নি। 


এ দিন নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে একেবারে অভিষেকের সভাস্থলের সামনে পৌঁছে যান আন্দোলনকারীরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।  অন্য়দিকে, হাইভোল্টেজ বুধবার, পুলিশের অনুরোধকে আমল না দিয়েই আন্দোলনে অনড় রইলেন, অভিষেকের সভামঞ্চ থেকে প্রায় ৬০০ মিটার দূরে, শহিদ মাতঙ্গিনী মূর্তির নীচে অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীরা।  চাকরি প্রার্থীদের দাবি, ২৫শে মার্চ মৌখিকভাবে তাঁদের ধর্না তুলে নিতে বলা হয়। রাষ্ট্রপতির সফরের কথা বলে, পুলিশ চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান তুলে নিতে অনুরোধ করে বলে দাবি। ২৬শে মার্চ ফের আসে পুলিশের মেল। কিন্তু, অবস্থানে অনড় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে বসা ৭টি মঞ্চ। 


এ দিকে, চাকরির দাবিতে ২ বছর ধরে, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আন্দোলন করে চলেছেন ২০১৬-র SLST নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। বুধবার আন্দোলনের ৭৪৫ দিন। একদিকে যখন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে ধর্নায় তৃণমূলনেত্রী। অন্য়দিকে, শহিদ মিনারে তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের সমাবেশের প্রধান বক্তা অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়...তখন, তার সামান্য় কিছু দূরে রুটি-রোজগার-চাকরির দাবিতে পথে বসে রয়েছেন এই অসহায় চাকরিপ্রার্থীরা। আর কতটা পথ হাঁটলে লক্ষ্য়ে পৌঁছতে পারবেন তাঁরা? কবে তাঁদের দাবি শাসকের কানে পৌঁছবে? উত্তর অজানা।