কলকাতা: অভিষেকের হাজিরার পরের দিনই ইডির (Enforcement Directorate) নজরে অভিষেকের সম্পত্তি। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিষেকের কাছে আরও নথি চাইল ইডি। 'অভিষেক ও তাঁর পরিবারের নামে কোথায় কত সম্পত্তি?' জানতে সম্পত্তির হিসেব চাইল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এখনও লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডসের সিইও, ইডির কাছে স্বীকার করেছেন অভিষেক। কোম্পানিতে সিইও-র ভূমিকা কী, জানতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। অভিষেকের গতকালের বয়ান ও ইডির কাছে থাকা তথ্য খতিয়ে দেখছেন ২ অফিসার।


বুধবার অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে (Abhishek Banerjee) ম্য়ারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করল ED। গ্রেফতারির আগে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সম্পর্কে যে মন্তব্য় করেছিলেন, তার প্রসঙ্গ টেনেও এদিন বার্তা দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিষেককে লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডসের সিইও বলেছিল ইডি। এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তা নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। 


সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে 'কালীঘাটের কাকু'র এই মন্তব্য়ই কি এখন ED-র মূল হাতিয়ার? জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে অভিষেকের বার্তা। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ১৭ এপ্রিল, লিপস্ অ্যান্ড বাউন্ডসের আধিকারিক সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে গ্রেফতার করে ED. তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে প্রথমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করা হয়। 


চার্জশিটের ২২ নম্বর পাতায় ইডি দাবি করে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই কালীঘাটের কাকু। যুব তৃণমূলের তৎকালীন সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক বিষয়গুলি দেখাশোনা করতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এ ছাড়াও তাদের চার্জশিটে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নিয়ন্ত্রণাধীন কোম্পানি এস ডি কনসালটেন্সির যোগ, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিস থেকেই এস ডি কনসালটেন্সির কাজকর্ম পরিচালনা এবং পরিবর্তে মোটা টাকা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অ্য়াকাউন্টে ঢোকার মতো একাধিক চাঞ্চল্য়কর দাবি করে ইডি। 


গত ২১ অগাস্ট, নিউ আলিপুরে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসে তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর দু-দিন পরই ২৩ অগাস্ট প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ED জানায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (CEO) এবং ২০১২-র এপ্রিল থেকে ২০১৪-র জানুয়ারি পর্যন্ত এই কোম্পানির ডিরেক্টর ছিলেন। এই সংস্থাকে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে।


এরপর ২৯ অগাস্ট, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের জিজ্ঞাসাবাদ না করা নিয়ে, হাইকোর্টে ভর্ৎসিত হয় ED। বিচারপতি অমৃতা সিন্হা, ED-র আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আদালত কি তদন্তে বাধা দিয়েছে? তাহলে কেন তদন্ত করছেন না? কেন সমন পাঠাননি? আদালত কড়া পদক্ষেপ নিতে বারণ করেছে। কড়া পদক্ষেপ মানে কি, তদন্ত করা যাবে না? CEO কত টাকার লেনদেন করেছেন সেটা তাঁকে জিজ্ঞাসা না করলে জানবেন কীভাবে?  


আদালতের কড়া মনোভাবের মুখে ED-র আইনজীবী জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠানো হবে। এর পর বুধবার অভিষেককে ম্য়ারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করল ইডি। গত জুন মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ED তলব করলেও, সেবার হাজিরা দেননি অভিষেক। নবজোয়ার কর্মসূচি এবং পঞ্চায়েত ভোটের কারণ দেখিয়ে ED-কে ১৫ পাতার চিঠিও পাঠিয়েছিলেন, ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ।


আরও পড়ুন: TMC : চাকরি-সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ, রাস্তায় দাঁড় করিয়ে তৃণমূল নেতাকে মার