রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: ফের আরও একবার সন্তানের প্রতি হাতি মাতার মমত্ব দেখল জলপাইগুড়ি। খরস্রোতা হাতিয়াঝোড়া নদী পার হতে পারছিল না হাতির ছানা। প্রচন্ড জলের তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সে। এদিকে ততক্ষণে খবর পৌঁছে গিয়েছে বনকর্মীদের কাছে। তবে শেষ অবধি হাতি শাবককে বনকর্মীরা রক্ষা করার আগেই ত্রাতা হয়ে এল হাতি শাবকের মা। সন্তানকে দেখতে পেয়ে মা এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ছানাটিকে।
আরও পড়ুন
প্রায় ২ কোটি টাকার চাকরির অফার পেলেন যাদবপুর পড়ুয়া
এই হাতির দলটি গতকাল ডুয়ার্সের ডায়না জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে ভগতপুর চা বাগানে চলে আসে। সকালে যখন শ্রমিকেরা চা বাগানে কাজ করতে আসে তখনই তারা হাতির দলটিকে দেখতে পায়। হাতির দলটি থাকায় চা বাগানের ওই সেকশনে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসে খুনিয়া ও ডায়না রেঞ্জের বনকর্মীরা। চলে আসে নাগরাকাটা থানার পুলিসও। বেলার দিকে হাতির দলটি ঘাঠিয়া ঝোড়া পেরিয়ে ঘাঠিয়া চাবাগানে চলে যায়। সেই সময় দলের সঙ্গে ঝোড়া পার হতে গিয়ে প্রচন্ড জলের তোড়ে ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল ছানাটির, পরে তার মা তাকে উদ্ধার করে।
প্রসঙ্গত, এমন ঘটনা এই প্রথমবার নয়, আগেও ঘটেছে উত্তরবঙ্গের ঘনজঙ্গলে। তবে সেবার শেষ রক্ষা হয়নি। এর আগে ডুয়ার্সে একবার হাতির শাবককে খুঁজে পাওয়ার পর দীর্ঘ ৭২ ঘন্টা আগলে রাখে মা। কিন্তু, দুঃখ্যের বিষয়, শেষ অবধি হস্তি শাবকটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। অবলা মা বুঝতে পারেনি যে, তাঁর সন্তান , তাঁর কোলে শুয়েই চির ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছে। তবে দাঁতালদের আরও একাধিক ঘটনা রয়েছে, সন্তানকে যে পরম যত্নে উদ্ধার করেছে হাতি মাতা।
জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকায় প্রায়শই দাঁতালদের লোকালয়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। দাঁতালদের বাঁচাতে পাহাড়ি পথে একাধিক বার এক্সপ্রেস ট্রেনও দাঁড়িয়েছে। তবে অনেকবারই ট্রেনের আঘাতে, রাতের অন্ধকারে প্রাণও হারিয়েছে দলছুট হাতি। অনেকসময়ই মশাল জ্বালিয়ে হাতিদের তাড়া করতে দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের। তবে চাষের জমি নষ্ট করা এবং হাতির আক্রমণে জখম হওয়ার জেরে ক্ষোভ উগরেও দিয়েছে আমজনতা। তাই এনিয়ে আগের থেকে আরও বেশি সতর্ক বন দফতর।