কলকাতা: মোদি পদবী নিয়ে মন্তব্য করায় সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর। তাহলে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) রেহাই পান কী করে, বুধবার প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) তাঁর প্রশ্ন, রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) নীরব মোদি, ললিত মোদি এবং নরেন্দ্র মোদিকে চোর বললে যদি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়, সাংসদ পদ খারিজ হয়, তাহলে ২০২১ সালে বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী যখন দিদিইইই ও দিদিইইই বলেছিলেন, তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হবে না কেন। 


কংগ্রেস নেতা রাহুলের সাসংদ পদ খারিজ হওয়ার পরই ট্যুইটারে সরব হয়েছিলেন অভিষেক। নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে ভারতে গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বুধবার কলকাতার শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকেও রাহুলের সাংসদ পদ যাওয়া নিয়ে মুখ খোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, "ভারতে আইন সকলের জন্য এক হওয়াই রীতি। তিন দিন আগে রাহুল গান্ধীর সাংসদপদ খারিজ হয়েছে। আমরা এর বিরোধিতা করেছি। রাহুল গান্ধী বলে নয়, অন্য কোনও সাংসদ হলেও, যে কায়দায়, গায়ের জোরে একটি রাজনৈতিক মন্তব্যকে হাতিয়ার করে, দু'বছরের শাস্তি দেওয়া হয়েছে, সংসদের সদস্যতা খারিজ করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ করতাম আমরা।"


যে মন্তব্যের জন্য রাহুলের সাংসদ পদ গিয়েছে, তার সঙ্গে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের তুলনা টানেন অভিষেক। তাঁর কথায়, "রাহুল কী বলেছিলেন? নীরব মোদি, ললিত মোদি আর নরেন্দ্র মোদি চোর বলেছিলেন। ওঁর মন্তব্যকে সমর্থন করি না আমি। করও ভাবাবেগে আঘাত করতে চাই না আমি। কিন্তু একটা প্রশ্ন করতে চাই। মোদি পদবীর লোকেদের চোর বললে সাংসদ পদ খারিজ হয়। বলা হয়, ভাবাবেগে আঘাত হানা হয়েছে। তাহলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ভোটে এসে যে দিদি ও দিদিইইই বলে মহিলাদের আঘাত করেছেন, তাঁর পদ খারিজ হবে না কেন? সমস্ত মহিলাদের উদ্দেশে যে ব্য়াঙ্গাত্মক, কুরুচিকর মন্তব্য করেন, তাঁর পদ খারিজ হবে না কেন?"


এ দিন অভিষেক আরও বলেন, "এখানে তফসিলি জাতির প্রতিনিধিরা জন উপস্থিত রয়েছেন। মোদি-মন্তব্যে যদি রাহুলের সাজা হয়, তাহলে বীরবাহা হাঁসদা, দেবনাথ হাঁসদাদের এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, 'এরা আমার জুতার তলায় থাকে'। তাহলে বিরোধী দলনেতার দু'বছরের জেল হবে না কেন? আইন কি আমার জন্য আলাদা, আপনার জন্য আলাদা। আমি তৃণমূল করি বলে ভারতের আইন এক, আর আপনি বিজেপি করেন বলে আর এক? কোথাকার আইন।"


অভিষেক জানান, আইনজীবীদের তিনি বলবেন সুরত কোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে কোর্টে যাবেন তাঁরা। অভিষেকের প্রশ্ন, ওবিসি সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত হয়েছে বলে যদি রাহুলের সাজা হয়, তাহলে তফসিলি সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ আঘাত করে কেন শুভেন্দু জেলে যাবেন না? এটা নিয়ে আগামী একমাসের মধ্যে পিটিশন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক তৃণমূলের আইনজীবীদের। তাঁর কথায়, "মানুষ দেখুন, যে বিচার ব্যবস্থা কাকে সমর্থন করছে, বিচারব্যবস্থা স্বাধীন কিনা। গুজরাতে  যদি ভারতের আইন প্রযোজ্য হয়, তাহলে বাংলাতেও তা প্রযোজ্য। রাহুল গান্ধীর সদস্যতা খারিজ হলে প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার হবে না কেন।" এ নিয়ে আগামী দিনে আন্দোলন তাঁরা জোরাল করবেন বলেও জানান অভিষেক।