কলকাতা: এক দশক পরে কামদুনিকাণ্ডের (Kamduni Case) রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন রায়দানে হাইকোর্ট দোষী সাব্যস্ত আনসার আলি মোল্লার ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ। দোষী সাব্যস্ত সইফুল আলি মোল্লারও ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ। ফাঁসির সাজা হয়েছিল অভিযুক্ত আমিন আলির, আজ বেকসুর রেহাই পায় আমিন আলি। রেহাই ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর ও আমিনুর ইসলামের। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন কামদুনির (Kamduni Verdict) দুই প্রতিবাদী টুম্পা এবং মৌসুমী কয়াল। গোটা ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কামদুনি কাণ্ডের প্রতিবাদী মুখ টুম্পা কয়াল এবং মৌসুমী কয়াল। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত নির্যাতিতার ভাই।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন,'এটা সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়। বহুক্ষেত্রেই দেখা যায় ফাঁসির রায় যাবজ্জীবনে হয়ে যায়। এত বছর হয়ে গেলে যাবজ্জীবনটা অ্যাডজাস্ট হয়। এটা ভয়ঙ্কর অপরাধ। আদালত নিশ্চয়ই সেইভাবেই রায় দিয়েছে। আদালতের রায় নিয়ে কিছু মন্তব্য করা যায় না। পুলিশ পুরোদস্তর তদন্ত করেছে। বাকিটা হাইকোর্টের বিষয়।'
রায়দানের পরেই টুম্পা কয়াল বলেন, 'আমরা অনেক আশা নিয়ে হাইকোর্টে এসেছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম যারা দোষী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়। রাজ্য়ের মানুষ দেখেছিল আমাদের আন্দোলন, আমরা নিরপেক্ষ ভাবে আন্দোলন করেছিলাম। আমরাও আরও ভরসা করেছিলাম আমাদের সরকারের উপরে। আমাদের সরকার গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে যারা দোষী তারা শাস্তি পাবে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা হাইকোর্টে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি।' কলকাতা হাইকোর্টের (High Court) একটি পর্যবেক্ষণ ছিল যে, অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকেই সাত-দশ বছর সংশোধনাগারে রয়েছেন। সেই কারণেই মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন এবং বাকিদের রেহাই দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করায় টুম্পা বলেন, 'আমার কিছু বলার নেই। আমাদের রাজ্যে যেখানে একের পর এক মায়ের কোল খালি হচ্ছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা যে হাইকোর্টে এই রায় পাব এই আশাটাই করিনি। আমরা আস্থা রেখেছিলাম বিচারপতির উপর। আজকে আমাদের কামদুনিতে হয়েছিল। আমরা সুপ্রিম কোর্ট যাব। আমরা শেষ দেখে যাব।'
এবিপি আনন্দের স্টুডিওয় টুম্পা কয়াল বলেন, 'এখনও পর্যন্ত ১৪ জন আইনজীবী আমাদের মামলা থেকে সরে গিয়েছেন। তখনই আমরা আন্দাজ করেছিলাম এমন কিছু হবে। সরকার আমাদের কথা দিয়েছিল যে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। একদিকে সরকার আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অন্যদিকে দোষীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। কারণ সরকারি আইনজীবী একের পর এক টাকা নিয়ে তাঁরা বিক্রি হয়ে গিয়েছেন।'
আরও পড়ুন: তালা ভেঙে লোপাট টাকা-গয়না! রানিবাঁধে চুরি শিক্ষকের ঘরে