সুদীপ চক্রবর্তী, রাজীব চৌধুরী ও রানা দাস-উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ এবং পূর্ব বর্ধমান: রোগী মৃত্য়ুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার। কোথাও মহিলা চিকিৎসক ও নার্সকে হেনস্থার অভিযোগ তো কোথাও হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল পরিবারের বিরুদ্ধে। আবার কোথাও নার্স কোয়ার্টারে ঢুকে পড়ল মত্ত যুবক। তিনটি ঘটনাতেই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।
সোমবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে এক বৃদ্ধার মৃত্য়ু হয়।সেই ঘটনায়, হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে এক মহিলা চিকিৎসক এবং এক নার্সকে গালিগালাজ এবং ধাক্কা দেওয়ার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে পরিবার ও আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। আর সেই ঘটনাতেই উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। রায়গঞ্জ মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালের নার্স বলেন,'কালকে এক জন পেসেন্ট মারা গেছে। অবস্থা ভাব ছিল না। সেটা পেসেন্টের পরিবারকে বার বার জানানো হয়। পেসেন্ট মারা যাওয়ার পরই রোগীর আত্মীয়রা আমি আমার মহিলা চিকিৎসককে অকথ্য় ভাষায় গালাহালি করে ধাক্কাধাক্কি করে। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্য়বস্থা ভাল নেই।' রায়গঞ্জের ঘটনায় মৃতের ছেলে বলেন,'আমার মাকে সেলাইন দেওয়ার আধঘণ্টা পর মা মারা যায়। আমি জানতে চাই কীভাবে মারা গিয়েছে মা। আমি জানতে চাইব না। আমি জানতে গেলে আমার ওপরে চোটপাট করে। আমরা কিছু করিনি।'
হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে ভাল নয়, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত MSVP.রায়গঞ্জ মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত MSVP বিদ্য়ুৎ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, নিরাপত্তা ব্য়বস্থা ভাল নেই। নিরাপত্তা কঠোর করতে হবে। দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। ঘটনার প্রেক্ষিতে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। মঙ্গলবার, এক প্রসূতির মৃত্য়ু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল মুর্শিদাবাদের ডোমকোল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। হাসপাতালের জিনিসপত্র ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। মৃতার প্রতিবেশী বলেন, ডাক্তার নেই যত্ন নেই, অযত্নেই মারা গেল। ঘুসি মেরে মুখ ফাটিয়ে দিয়ে সিঁড়িতে পাঁচ সাতজনকে মেরেছে। ভলান্টিয়াররা মেরেছে। রাগারাগির জন্য় মেরেছে। বাচ্চা মরে গেছে মাথা স্বাভাবিক গরম হবেই। ডেকে বলেছে কীসের জন্য় হল। ডাক্তাররা পরওাই করছে না। অসুস্থ ছিল না। ফিটফাট রোগী, কথা বললাম ফোনে, সকালে ফোন করলাম। ফোন করে বলল এই ব্য়াপার। এসে দেখলাম এই কেস।'
আরও পড়ুন, মুখে কালো কাপড়, RG কর কাণ্ডে দুর্গা পুজোয় অভিনব প্রতিবাদ জলপাইগুড়িতে
মুর্শিদাবাদের ঘটনায় মৃতার মা বলেন, 'আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। বারবার ডাকা হয় নার্সরা দুর্ব্য়বহার করে। মেয়ে ছটফট করছিল। কোনও ডাক্তার আসেনি। তারপর আমাদের মারধর করল। চুলের মুঠি মারধর করেছে। আমাদের মেয়ে মারা গেল।' মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, সন্দীপ সান্যাল জানিয়েছেন, 'গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' অন্য়দিকে, নার্সিং কোয়াটারে এক মত্ত যুবকের ঢুকে পড়াকে ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া হাসপাতালে। নার্সদের অভিযোগ, তাঁদের ঘরের দরজায় ধাক্কা দেয় ওই যুবক। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে কাটোয়া থানার পুলিশ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।