কলকাতা : এবার মাধ্যমিকে কলকাতায় প্রথম ও রাজ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে শ্রুতর্ষি ত্রিপাঠি। পাঠভবন স্কুলের ছাত্র সে। ৬৯০ পেয়ে চতুর্থ শ্রুতর্ষি। তার এই সাফল্যে খুশি পরিবার। কীভাবে এই সাফল্য অর্জন করল শ্রুতর্ষি এবং তাদের ভূমিকাই বা কী ছিল তা জানালেন তার বাবা শুভঙ্কর ত্রিপাঠী।   


কলেজের অধ্যক্ষ শুভঙ্করবাবু বলেন, "ছেলের পড়াশোনায় আমার থেকেও আমার স্ত্রীর ভূমিকা বেশি ছিল। জীবনের সমস্ত শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে ছেলেকে নিয়েই থেকেছে। আমরা অতি সাধারণ জীবন-যাপন করি। আমি সম্ভবত একমাত্র অধ্যক্ষ, যে পাবলিক ভেহিকেলে যাতায়াত করি। আমাদের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। শ্রুতর্ষি যখন ক্লাস থ্রিতে, তখনই আমাদের বাড়ির টিভি বন্ধ করে দেয় আমার স্ত্রী। শর্ত দেওয়া হয়, টুয়েলভে ভাল রেজাল্ট করার পর তখন আবার বাড়িতে টিভি চালু হবে। বাড়িতে লাইব্রেরি আছে। বিভিন্ন নামী সাহিত্যিকের বই আছে। বহু প্রবন্ধের বই আছে। যখন মেথডিক্যাল পড়াশোনায় বোর হয়, তখন সেগুলি পড়ে ছেলে। নেটে পড়াশোনা করে। ছোট থেকেই কম্পিউটার ট্রেনিং শুরু হয়েছে। আমি ফিজিক্সের, আর আমার স্ত্রী এমএসসি ম্যাথেমেটিক্সে। হাউসওয়াইফ। বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহটা আমাদের হাত ধরেই হয়েছে। ক্লাস থ্রি-তে টিচার্স ডে-তে আইনস্টাইনের বিখ্যাত ইক্যুয়েশন বিশ্লেষণ করে বলেছিল। বুঝেই বলেছিল। ওর মায়ের জন্য ওর অঙ্কের বেসটা শক্তিশালী। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পেয়েছে।"


তিনি আরও জানান, "বোর হলে গান শোনে শ্রুতর্ষি। আমার সিনেমা দেখার খুব নেশা। ওটা আমার ছেলের মধ্যে চলে এসেছিল। তাই থ্রি থেকে টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়িতে টিভি দেখি না। আমার খুব কষ্ট হত, এখন আর হয় না। ছেলের এই রেজাল্টের পর মনে হচ্ছে, ওর মা যেটা করেছিল তা মঙ্গলের জন্যই। এটা করে খুব ভাল হয়েছে। খবরের চ্যানেলের অনুমতি ছিল। কিন্তু, সেটা বাড়ির টিভিতে নয়। ল্যাপটপে বা ডেস্কটপে। তাতে সিনেমা দেখার স্কোপটা থাকবে না।"