কলকাতা : রক্তক্ষরণ থামার লক্ষ্মণ মিলেছিল আগেই। এবার কি হাল ফেরানোর পথে লাল শিবির? পুরভোটের (West Bengal Municipal Election) ভোটের শতাংশ ধরলে ইঙ্গিত সেরকমই। বিজেপিকে পিছনে ফেলে রাজ্যের ১০৮ পুরভোটের প্রাপ্ত ভোট শতাংশের বিচারে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। গতবছর বিধানসভা ভোটে আসন সংখ্যা শূন্যে ঠেকলেও গত বছরখানেকে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। এবারের পুরভোটে বামেদের (Left) প্রাপ্ত ভোটের হার ১৪ শতাংশ। আর অনেকটাই কমে বিজেপি (BJP) ভোট পেয়েছে ১৩ শতাংশ। সবুজ সুনামিতে ভর করে ১০৮ পুরসভার ১০২ আসনে জেতার পথে ৬৩ শতাংশর বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। এদিকে, কংগ্রেস (Congress) ভোট পেয়েছে ৫ শতাংশ। আর নির্দল ও অন্যান্যদের প্রাপ্ত ভোটের হার ৫ শতাংশ। 


এদিকে, নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভা দখল করেছে সিপিএম। সেখানে ১৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টি ওয়ার্ডে সিপিএম জিতেছে। পাঁচটি ওয়ার্ডে জয় পেয়েছে তৃণমূলের। নিজেদের দখলে পুরসভা রাখতে সমর্থ হয়েছে তাহেরপুর। যে জয়ের পর ''তাহেরপুরের বামপন্থীদের স্যালুট জানাই, প্রতিকূলতার মধ্যেও ভোট দিয়েছেন তাঁরা'' জানিয়েছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। এদিকে বীরভূমে একটি আসনে জয়লাভ করেছে সিপিআইএম, তবে রাজ্যজুড়ে বিজেপির ফলাফল আশাব্যঞ্জক নয়। এ প্রসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, "বামেরা ফাইল করতে পেরেছে নমিনেশন, কংগ্রেস ফাইল করতে পেরেছে। বিজেপি কেন পারছে না? বিজেপির কোনও লোক নেই, সংগঠন নেই। ক'টা পাতাখোর, নেশাখোর লোকেদের দিয়ে ভোট হয়না। রাজনীতি একটা সংগঠন। তবুও তো সিপিএম ভোট পেয়েছে সব জায়গায়। ওঁরা উনিশে যে ভুল করেছিল, সেটা সংশোধন করেছে। আবার কিন্তু ভোট পাচ্ছে। আমার এখানেও ভোট পেয়েছে। সিপিআইএম সবজায়গায় কিন্তু আবার মাথা চাড়া দিয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ একটা সংগঠন আছে। সিপিআইএম দলটা নরেন্দ্র মোদির মত মিথ্যেবাদী দল নয়।"     


একঝলকে দলগুলির পুরভোটের ভোট শতাংশ-



  • পুরভোটেও ৬৩ শতাংশর বেশি ভোট পেয়ে জয়ী তৃণমূল।

  • বামেদের প্রাপ্ত ভোটের হার ১৪ শতাংশ।

  • বিজেপি ভোট পেয়েছে ১৩ শতাংশ।

  • কংগ্রেস ভোট পেয়েছে ৫ শতাংশ।

  • নির্দল ও অন্যান্যদের প্রাপ্ত ভোটের হার ৫ শতাংশ।




এদিকে, দার্জিলিং, তাহেরপুর, এগরা, বেলডাঙা, ঝালদা ও চাঁপদানি এই ছ'টি পুরসভা শুধুমাত্র দখল করতে ব্যর্থ হল তৃণমূল। নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভা (সিপিএম-৮, তৃণমূল-৫) দখল করেছে সিপিএম । দার্জিলিং পুরসভা (হামরো-১৭, গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা-৮, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা-৪, টাই-১ (হামরো ও তৃণমূলের)) দখল করেছে হামরো পার্টি। আর চাঁপদানি পুরসভা ( তৃণমূল ১১, নির্দল ১০, কংগ্রেস ১), এগরা পুরসভা (  তৃণমূল ৭, বিজেপি ৫,  কংগ্রেস ১,  নির্দল ১), বেলডাঙা পুরসভা  ( তৃণমূল ৭, বিজেপি ৩, নির্দল ৪) ও ঝালদা পুরসভা (তৃণমূল-৬, কংগ্রেস-১, নির্দল-২ (ভোটে জেতার পরই একজন নির্দল তৃণমূলে যোগ দেন)) হয়েছে ত্রিশঙ্কু।


আরও পড়ুন- ১০৮-এ পুরসভার ১০২ তৃণমূলের, কোন ছয় এল না দখলে? রইল বিস্তারিত তালিকা