পূর্ণেন্দু সিংহ, বিটন চক্রবর্তী, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর : ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায়। আর কদিন পরেই ধান কাটার সময়। তার আগে মাথায় হাত কৃষকদের। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুরের বিঘার পর বিঘা চাষের জমি জলের তলায়। জমা জলে পড়ে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। ঝড়ের দাপটে শীতকালীন সবজি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়।
হলদি নদীর তীরবর্তী এলাকার নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের খড়িবেড়িয়া, মহম্মদপুর, দীনবন্ধুপুর, জেলেমারা, দুর্গাপুর, গাংরা প্রভৃতি এলাকায় বাসিন্দাদের একমাত্র জীবিকাই হল সবজি চাষ। কয়েকদিনের মধ্যেই শীতের সিলসিলা শুরু হবে। আর তখন থেকেই শীতের সবজি বাজারে ঢোকে সাধারণত। সেই অনুসারে প্রস্তুতিও সেরে রাখেন কৃষকরা। কিন্তু 'দানা'র পর তাদের এখন মাথায় হাত। শীতকালীন সব শাক-সবজি, যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, পালং শাক, মুলো, ওলকপি বেড়েও উঠেছিল। তবে জমিতে জল জমে তা নষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি।
চাষিদের আশঙ্কা, অতি বৃষ্টির জন্য শাক-সবজি গাছের ক্ষেতে জল জমে গিয়েছে। ফলে তা নষ্ট হতে পারে। এখন আর নতুন করে শাক-সবজি লাগানো সম্ভব নয়। ফলে একদিকে যেমন সবজির জোগান কমবে, তেমনি বাড়ড়ে পারে সবজির দাম।
শুধু মেদিনীপুর নয়, একই ছবি বাঁকুড়াতেও। আবহাওয়া দফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় এই জেলায় ৫১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর তাতেই বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। কৃষিজীবি মানুষের দাবি, বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে নুয়ে পড়েছে বিঘার পর বিঘা জমির ধান, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মরশুমি সবজি চাষেরও। কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে উঠবেন তা বুঝেই উঠতে পারছেন না।
কৃষকদের আক্ষেপ, অতি বৃষ্টিতে সবজি পচতে শুরু করেছে। প্রতিবছর ধান বিক্রির টাকায় আলু চাষ হয়। কিন্তু এবার সেই সুযোগ হবে কি না সন্দিহান তাঁরা। চাষিদের আশঙ্কা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব সময় সরকারি ক্ষতিপূরণ মেলেনা। ফলে কীভাবে ধার দেনা শোধ হবে, কীভাবেই বা পরবর্ত্তী চাষের জন্য প্রস্তুতি নেবেন তাঁরা, তাই চিন্তায় ফেলছে সকলকে।
আরও পড়ুন, দানার জেরে কালীপুজোতেও কি ভোগাবে বৃষ্টি ? জেনে নিন বড় আপডেট
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।